আত্মসমর্পণে সাড়া নেই ইয়াবা গডফাদারদের : মাদকবিরোধী নতুন অভিযান ‘স্পেশাল ড্রাইভ’

ফাইল ছবি

কক্সবাজার জার্নাল ডেস্ক – কক্সবাজার ও টেকনাফকে প্রথম টার্গেট করে আবারও জোরদার হচ্ছে মাদকবিরোধী অভিযান। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের মতো এবারও মাদকের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে ‘স্পেশাল ড্রাইভ’ দিচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আর এ অভিযানের প্রথম টার্গেট কক্সবাজার ও টেকনাফ। এ টার্গেট সফল করার লক্ষ্যে শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে টেকনাফের ইয়াবা সম্রাট সাইফুলসহ ১২০জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আত্মসর্মপণ করবেন। এরইমধ্যে আত্মসর্মপণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে রেখেছে কক্সবাজার, টেকনাফ এলাকার প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা যায়,গত ৩ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা শপথ নেওয়ার পর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সদস্যরা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত থাকবে। মাদক সমাজকে ভয়াবহভাবে ক্ষতি করছে। কাজেই যারা মাদকের সঙ্গে যুক্ত তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

প্রধানমন্ত্রীর মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ‘স্পেশাল ড্রাইভ’ এর পরিকল্পনা নেয়। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শনিবার সফলের পথে আরেক ধাপ এগুচ্ছে বলে জানান কক্সবাজার পুলিশ সুপার।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনি নিরাপত্তায় ব্যস্ত থাকায় উদ্ধার অভিযান শিথিল ছিল। তবে এখন অভিযান জোরদার করায় মাদক ব্যবসায়ীরা ফের গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেড়াজালে রয়েছে কক্সবাজার ও টেকনাফের ১২০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী।

তালিকাভুক্ত ৭৩ গডফাদারের সাড়া মেলেনি

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল মধ্য জানুয়ারিতে। অবশেষে ১৬ ফেব্রুয়ারী শনিবার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত রূপ পেতে যাচ্ছে।

তবে ৭৩ গডফাদারসহ এক হাজার ৫১ জনের তালিকার অনেকেই এই আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় সাড়া দেয়নি। এদের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির তিন ভাইসহ সাত স্বজনও রয়েছেন।

ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া তদারকি করতে বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে পৌঁছেছেন।অনুষ্ঠানস্থলে মঞ্চ নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে। এ উপলক্ষে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং করে ব্যাপক প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। তবে এই অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন।

তবে আরো বড় বড় তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারীরা প্রশাসনের সাথে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করে ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরছেন। এখানে বেশির ভাগ রয়েছেন জনপ্রতিনিধি । তাদের গ্রেফতার দাবী করেছেন সচেতন মহল।

এদিকে, শনিবার আত্মসমর্পণ করছেন এমন কয়েকজন ইয়াবা কারবারীদের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ভাই আব্দুর শুক্কুর শফিকুল ইসলাম শফিক, আমিনুর রহমান ওরফে আব্দুল আমিন, ফয়সাল রহমান, বদির ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, আরেক ভাগিনা টেকনাফ পৌর কাউন্সিলার নূরল বশর ওরফে নূরশাদ, বদির খালাতো ভাই মং সিং থেইন ওরফে মমসি, ফুপাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল, মারুফ বিন খলিল বাবু, বদির বেআই সাহেদ কামাল।

টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আলমের ছেলে দিদার মিয়া, টেকনাফের হ্নীলার নুরুল হুদা মেম্বার, টেকনাফ সদর ইউপি মেম্বার এনামুল হক এনাম মেম্বার, সাবরাং এর মোয়াজ্জেম হোসেন দানু মেম্বার, হ্নীলার জামাল মেম্বার, শাহাপরীর দ্বীপের রেজাউল করিম রেজু মেম্বার, উত্তর আলী খালির শাহ আজম ও সাবারং নয়াপাড়ার আলমগির ফয়সাল লিটন।

ইয়াবা ডন হাজী সাইফুল করিমের দুই শ্যালক জিয়াউর রহমান ও আব্দুর রহমান। এছাড়াও টেকনাফের পশ্চিম লেদার নুরুল কবির, হ্নীলা সিকদার পাড়ার সৈয়দ আহম্মদ সৈয়দ, বন্দুকযুদ্ধে নিহত নাজির পাড়ার শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমানের ভাই আব্দুর রহমান, নাজির পাড়ার সৈয়দ হোসেন, নাইটং পাড়ার ইউনুস, ডেইল পাড়ার জাফর আলম, জাহাজপুরার নুরুল আলম, হ্নীলার রশিদ আহম্মদ ওরফে রশিদ খুলু, সদরের ডেইল পাড়ার আব্দুল আমিন ও নুরুল আমিন।টেকনাফ সদরের উত্তর লম্বরি এলাকার করিম মাঝি, হ্নীলা ফুলের ডেইলের রুস্তম আলী, শামলাপুর জুম পাড়ার শফিউল্লাহ, একই এলাকার সৈয়দ আলম, রাজাছড়ার আব্দুর কুদ্দুছ, মধ্যম জালিয়া পাড়ার মোজাম্মেল হক, জাহেলিয়া পাড়ার মোহাম্মদ সিরাজ, কচুবনিয়ার আব্দুল হামিদ, নাজিন পাড়ার মোহাম্মদ রফিক, পল্লান পাড়ার মোহাম্মদ সেলিম, নাইটং পাড়ার রহিমউল্লাহ, নাজিরপাড়ার মোহাম্মদ হেলাল, চৌধুরী পাড়ার মোহাম্মদ আলম, সদর ইউনিয়নের মৌলভি পাড়ার একরাম হোসেন।

এছাড়াও আরো যারা আছেন, হ্নীলার পূর্ব পানখালির নজরুল ইসলাম, সদর ইউনিয়নের তুলাতলি এলাকার নুরুল বশর, হাতির ঘোনার দিল মোহাম্মদ, একই এলাকার হাসান, সাবরাং নয়া পাড়ার নুর মোহাম্মদ, কচুবনিয়ার বদিউর রহমান ওরফে বদুরান, জালিয়া পাড়ার জুবায়ের হোসেন, হ্নীলার পূর্ব লেদার জাহাঙ্গীর আলম।

একাধিক সুত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারে মোট ৮টি থানার মধ্যে টেকনাফে ৯১২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আছেন। এছাড়া কক্সবাজার সদর থানায় ৪৩ জন, রামুতে ৩৪ জন, কুতুবদিয়ায় ৪৮ জন, উখিয়ায় ৭ জন, মহেশখালীতে ৩০ জন এবং পেকুয়ায় ২২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছেন।

মূলত টেকনাফে পরিবারকেন্দ্রিকভাবে ইয়াবা ব্যবসা চলছে। মা-বাবা, স্ত্রীসহ অনেক পরিবারের প্রায় সবাই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। এদিকে মাদক ব্যবসায় জড়িত অধিকাংশের নামে ১০/১৫টি মামলা রয়েছে। কিন্তু ৬৫ ভাগ আসামি জামিনে থেকে দেদারসে ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। বাকিদের মধ্যে কেউ পলাতক আবার কেউ গ্রেফতার হননি।

উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা রফিক উদ্দিন ও তার ভাই বাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজ উদ্দিন, টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া প্রমুখ। এদের মধ্যে মাওলানা আজিজ উদ্দিন ও তার ভাই রফিক উদ্দিন এবং শাহজাহান মিয়া নৌপথ নিয়ন্ত্রণ করেন। বড় চালান আসে সাগর পথে।

ভয়ংকর মাদক ইয়াবা পাচারের অন্যতম রুট হওয়ায় ‘ইয়াবার ট্রানজিট ঘাট’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে টেকনাফ। এ কারণে সাধারণ মানুষও বিভিন্ন সময় দুর্নামের ভাগিদার হয়েছে। অনেকে হয়রানির শিকার হয়েছে। সে জন্য আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান ঘিরে সীমান্তের সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে এলাকার বাইরে থাকা টেকনাফের অনেক বাসিন্দা এলাকায় ফিরছে।

চট্টগ্রাম কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘ইয়াবার কারণে এত দিন টেকনাফের বাসিন্দা হিসেবে পরিচয় দিতেও লজ্জা লাগত। অবশেষে ইয়াবার সেই গডফাদাররা আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে শুনে ভালো লাগছে। তাই এই ক্ষণটির সাক্ষী হতে চট্টগ্রাম থেকে এলাকায় এসেছি।’

জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৈরি এক হাজার ১৫১ জন ইয়াবা কারবারির তালিকায় ৭৩ জনকে গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ জন গডফাদারসহ তালিকাভুক্ত প্রায় দেড় শ কারবারি আত্মসমর্পণের জন্য কক্সবাজার পুলিশের সেফ হোমে রয়েছে। তবে সংখ্যাটি বাড়তে পারে।

আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশের সেফ হোমে থাকা ইয়াবা গডফাদারদের মধ্যে রয়েছেন কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির তিন ভাই আব্দুল আমিন, ফয়সাল ও শফিক; খালাতো ভাই মং মং সি, ফুফাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল, ভাগ্নে শাহেদুর রহমান নিপু, চাচাতো ভাই মো. আলম, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে দিদার আলম, হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য নুরুল হুদা, জামাল হোসেন, টেকনাফ পৌর কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ, সাবরাং ইউপির সদস্য রেজাউল করিম রেজু, টেকনাফ সদর ইউপির সদস্য এনামুল হক, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর দুই ভাই জিয়াউর রহমান ও আব্দুর রহমান, টেকনাফের দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার জুবাইর ও মোজাম্মেল।

এদিকে তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ার বাইরে রয়েছে টেকনাফ সীমান্তের অনেক ইয়াবা কারবারি। সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ছোট ভাই টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মৌলভী মুজিবুর রহমানের নাম তালিকার শীর্ষে থাকলেও তিনি আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন না। সীমান্তের একাধিক ইয়াবা সিন্ডিকেটের নেতৃত্বদানকারী মৌলভী মুজিব প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন।

এ ছাড়া টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ ও তাঁর ছেলে সদর ইউপির চেয়ারম্যান শাহজাহান মিয়া, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী রফিক উদ্দীন ও তাঁর ভাই বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ উদ্দীন, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার ইয়াবা ও হুন্ডিসম্রাট হিসেবে পরিচিত জাফর আহমদ ওরফে টিটি জাফরসহ আরো অনেকের নাম ৭৩ জন গডফাদারের তালিকায় থাকলেও তারা আত্মসমর্পণ করছেন না বলে জানা গেছে।

আত্মসমর্পণের পর কী হবে?
——————
আত্মসমর্পণের জন্য পুলিশের হেফাজতে থাকা ইয়াবা কারবারিদের ভাগ্যে পরবর্তী সময়ে কী ঘটবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক কৌতূহল আর প্রশ্ন। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল কেউ বিশদ মন্তব্য করেননি। তবে এর আগে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেছিলেন যে আত্মসমর্পণ করলেই তাদের (ইয়াবা কারবারিদের) সব কিছু মাফ হয়ে যাবে তা নয়।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা কারবারিদের নির্দিষ্ট মেয়াদে সাজা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে মাদকের কারবার থেকে অর্জিত অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। পুলিশ হেফাজতে থাকা ইয়াবা কারবারিদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে দুই থেকে ২০টি পর্যন্ত মাদকের মামলা থাকায় তাদের সাজা ভোগ করার বিষয়টি অনেকটা অনুমেয়। তবে তাদের অঢেল অর্থ-সম্পদের বিষয়ে কী হবে তা জানা যাচ্ছে না।

পরিবারের সদস্যরাও জানে না আত্মসমর্পণের পর তাদের স্বজনের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে। তবে তাদের ধারণা, আত্মসমর্পণ করে সহজেই পার পেয়ে যাবে ইয়াবা কারবারিরা। আর সাজা হলেও তা হবে ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ডের’ মতো।

পুলিশ হেফাজতে থাকা রেজাউল করিম রেজুর ভাই ফরিদ আহমদ বলেন, ‘ভাইয়ের নাম ইয়াবা গডফাদারের তালিকায় রয়েছে। তিনি পুলিশের হেফাজতে চলে গেছেন। শুনেছি তাদের নির্দিষ্ট মেয়াদে সাজা দেওয়া হবে। তবে সেই মেয়াদের মাত্রা সম্পর্কে কিছু জানি না।’

সাবরাং নোয়াপাড়া থেকে আত্মসমর্পণ করতে যাওয়া মোহাম্মদ তৈয়বের ভাবি এবং বন্দুকযুদ্ধে নিহত ইয়াবা কারবারি শামসুল আলম ওরফে মার্কিনের স্ত্রী তৈয়বা বেগম বলেন, ‘শুনেছি আত্মসমর্পণ করলে তাদের সব কিছু মাফ করা হবে। তাহলে এই সুযোগটা সবাইকে দেওয়া উচিত ছিল। আমার স্বামীকে না মেরে আত্মসমর্পণের সুযোগ দিলে আমি আজ বিধবা হতাম না।’

সূত্র জানায়, গত এক বছরের মাদকবিরোধী অভিযানে ১ লাখ ১৫ হাজার মামলায় প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বছরের মে মাস থেকে পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্ট গার্ডসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) সোহেল রানা বলেন, মাদকের ভয়াল থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান সব সময়ই ‘জিরো টলারেন্স’। এ লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকবিরোধী অভিযান জিরো টলারেন্স নীতিতে চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা বিশেষ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।  নতুন পরিকল্পনা নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি অন্যান্য কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।