ধূমপান নিয়ে ইসলামে যা বলা হয়েছে

বিশ্বে যত মানুষ মারা যায় তার দ্বিতীয় প্রধান কারণ ধূমপান। প্রতিবছর ৫৮ লাখের বেশি মানুষ মারা যায় ধূমপানের কারণে, প্রতি ১০ জনে একজন। ধারণা করা হচ্ছে ২০৩০ সাল নাগাদ এর অবস্থা দাঁড়াবে ৬ জনের মধ্যে ১ জন। এ ছাড়া ধূমপানে রয়েছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি।

এতে আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত ক্ষতিও রয়েছে। এসব কিছু জেনে শুনেও মানুষ ধূমপানের মতো ধ্বংসাত্মক বিষয়ে জড়িয়ে থাকে। জেনে শুনে নিজের জান-মালের ক্ষতি করা গুনাহ। এছাড়া ইসলাম ক্ষতিকর বিষয় থেকে দূরে থাকার আদেশ দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘(তোমরা) নিজের হাতে নিজেকে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৫)

ধূমপানের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকের প্রতি খেয়াল রেখে ইসলামী আইনজ্ঞরা ধূমপান করাকে মাকরুহ বলে থাকেন। (ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১১/৪০৬)।

তা ছাড়া এটি সর্বজনস্বীকৃত বিষয় যে, ধূমপান কোনো ভালো কাজ নয়। এছাড়া ধুমপায়ীর মুখের দুর্গন্ধে অন্যের কষ্ট হয়, যা পৃথক একটি গুনাহ। তাই ধুমপান থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। কোনো মুমিন ধূমপান করে অন্যকে কষ্ট দিতে পারে না। রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ অপরের ক্ষতি করলে আল্লাহ তার ক্ষতিসাধন করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)।

আর ধূমপানের কারণে মুখ দুর্গন্ধযুক্ত হলে, এ অবস্থায় নামাজে দাঁড়ানো মাকরূহে তাহরীমী। বরং এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাও মাকরূহ। হাদীস শরীফে ধূমপানের চেয়ে অনেক কম দুর্গন্ধ বস্ত্ত কাঁচা পেঁয়াজ-রসুন খেয়ে মসজিদে প্রবেশ করতেও নিষেধ করা হয়েছে।

অতএব বিড়ি-সিগারেটের তীব্র দুর্গন্ধের সাথে মসজিদে প্রবেশ করা যে নিষিদ্ধ হবে তা তো সহজেই অনুমেয়। অবশ্য এ কারণে নামাজ ত্যাগ করা যাবে না এবং মসজিদে গমনাগমনও বন্ধ করা যাবে না। বরং অতি দ্রুত এ বদ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে। আর নামায আদায়ের পূর্বে এবং মসজিদে প্রবেশের আগে ভালো করে মেসওয়াক বা ব্রাশ করে দুর্গন্ধ দূর করে নিতে হবে। -(ফাতাওয়াল লাজনাতিদ দাইমা ১৩/৫৬; আলফাতাওয়াশ শারইয়্যাহ ১০/১৪৫; রদ্দুল মুহতার ১/৬৬১)