১ বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ৫০০ মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট-  বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গত এক বছরে কক্সবাজারের বিভিন্ন থানায় অন্তত ৫০০ মামলা হয়েছে। মাদক ব্যবসা ও পাচার থেকে শুরু করে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, চুরি, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাও এর মধ্যে রয়েছে। এসব মামলার আসামি প্রায় এক হাজার। সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে মাদকের। এরপর খুনের।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, প্রায় প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা ধরা পড়ছে মাদক আর অস্ত্র নিয়ে। ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে শ্রমমূলক কাজের পাশাপাশি চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চোরাচালানের মতো অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে।

টেকনাফ থানা সূত্রে জানা গেছে, জালাল নামের এক রোহিঙ্গার নামে সম্প্রতি ডাকাতির মামলা হয়েছে। তিনি হামিদা নামের এক রোহিঙ্গা নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নিজ বাড়িতে রাখেন। এই নারী দিনের বেলায় উনচিপ্রাং শিবিরের বিভিন্ন ব্লকে ঘোরাফেরা করেন এবং বাড়ি ফিরে কোন রোহিঙ্গার বাড়িতে স্বর্ণালংকার আছে তা জালালকে জানান। সেই তথ্য অনুযায়ী জালাল ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়েন।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ কে এম ইকবাল হোসেন বলেন, দিন দিন রোহিঙ্গাদের অপরাধ বাড়ছে। ইতিমধ্যে কিছু চিহ্নিত অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সতর্ক থাকতে হবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো ঘিরে চলছে মাদক ব্যবসা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হচ্ছে ইয়াবাসহ রোহিঙ্গারা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, শুধু মাদক নয়, খুনের মতো অপরাধেও জড়িয়ে গেছে রোহিঙ্গারা। ইতিমধ্যে ৩০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে। ১৩ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের পাশের একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে দুই ব্যক্তির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এদিকে রোহিঙ্গাদের হামলার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে পুলিশ, এনজিও কর্মকর্তাসহ ত্রাণ সহায়তা দিতে আসা লোকজনও। বিভিন্ন শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের নিজেদের মধ্যেও বাড়ছে ঝগড়া-বিবাদ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামালউদ্দিন এসব তৎপরতা সম্পর্কে বিভাগীয় কমিশনারদের সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমরাও জানতে পেরেছি এসব অপরাধের কথা। রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প মাদক ও অস্ত্রমুক্ত রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার কঠোর নজরদারির পাশাপাশি বিভিন্ন সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’