অব্যবস্থাপনার ভেড়াজাল ও লাল ফিতায় বন্দি ইনানী সমুদ্র সৈকত 

ফারুক আহমদ,উখিয়া ◑

সাগরকন্যা হিসেবে খ্যাত নান্দনিক জীব বৈচিত্র্যে অপরূপ সৌন্দর্য ইনানী বিচ উন্নয়নে লাল ফিতা ফাইলবন্দি।

পর্যটন মন্ত্রণালয় ও পর্যটন কর্পোরেশনের সদিচ্ছার অভাবে সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পটটি যেভাবে আছে সেভাবেই পড়ে রয়েছে। উন্নয়নের ছোঁয়া বলতে কিছুই নেই। ভ্রমণ পিপাসু দেশী বিদেশী পর্যটকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ইনানী সি বিচ ইজারা দিয়ে কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে। নাগরিক সমাজের মতে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উন্নয়নে সিকি পরিমাণ টাকা ব্যয় বা খরচ করছে না। অনেকের প্রশ্ন ইজারা খাতের টাকাগুলো যায় কোথায়।

কক্সবাজারের অন্যতম পর্যটন স্পট হচ্ছে ইনানী সী বিচ। এ ছাড়াও পাটুয়ারটেক, মোহাম্মদ শফির বিল সহ মন খালি পর্যন্ত একাধিক ট্যুরিজম স্পট রয়েছে। মেরিন ড্রাইভ দিয়ে সহজেই এসব ট্যুরিজম স্পটে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে আসে।

সবুজ অরণ্য পাহাড়ঘেরা ইনানী সী-বীচ যেন অপূর্ব সৌন্দর্য হাতছানি। লাল কাঁকড়া ও পাথর বেষ্টিত এ বিচটি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। বিশেষ করে সাগরের নীল জল রাশি ও সারি সারি ঝাউবন এবং পাথরের সাথে ঢেউয়ের গর্জন এক অপূর্ব মিতালী।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক ইনানী পাটুয়ারটেক সহ বিভিন্ন স্পটে ভ্রমণ করতে আসে। কিন্তু অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় পর্যটকরা হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়।

ভ্রমণে আসা ঢাকা স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষার্থী রাজিবুল হাসান ও রিয়াজুল মোবিন সোহাগ জানান, পর্যটকদের জন্য ওয়াশরুম বা চেঞ্জ রুম না থাকায় পর্যটকদেরকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাহাত ইবনে সায়েম ও নাদিম মাহমুদ বলেন, সম্ভাবনাময় ইনানী বিচে অবকাঠামো উন্নয়নসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হলে পর্যটন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করা সম্ভব হতো।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, বিগত ১২ বছর বা এক যুগের অধিক সময়ে ইনানী বীচে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। চোখে পড়ার মতো সরকারিভাবে অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। পর্যটন মন্ত্রণালয় কিংবা পর্যটন কর্পোরেশনের পক্ষে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, পর্যটকদের বিশ্রামাগার এমনকি গাড়ি পার্কিংয়ের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি।

এতে করে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা যেমনি ভাবে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে তেমনি ভাবে চরম নাখোশ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতেছে। বলতে গেলে অব্যবস্থাপনার বেড়াজালে ইনানী সী-বীচ এখন সৌন্দর্য হারাতে বসেছে।

এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিমসহ ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা সবসময় টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়াও ইনানী বীচকে আধুনিক ও পর্যটন বান্ধব করতে নানা পরিকল্পনা তৈরী ও প্রণয়ন করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।