আমিও রোয়াইঙ্গা হবো!

আলমগীর মাহমুদ

“মানীর অপমান শিরচ্ছেদ তুল্য”
একদিকে সাপ অন্যদিকে কুমীর মধ্যে কক্সবাজারবাসী।

মরিচ্যা চেকপোস্ট। উখিয়া কক্সবাজার।পঁচিশ বছর এ পথে আসা যাওয়া। জন্ম, বেড়ে উঠাও। সী লাইন গাড়ীর সামানে দরজার পাশের সীটটিতে ছিলাম বসা। বিজিবির একজন উঠেই। আপনার কার্ড দেখান। বলি ভাই কার্ডতো নেই। আমারে দেখতে কি রোয়াইঙ্গার মত লাগে?

না আপনার কার্ড দেখাতে হবে।আমি চুপচাপ রইলাম।জানতে চায় আমার বাসা কোথায়? বি,জি,বি ক্যাম্প।এই উত্তরের পরও চুপ রইলাম।এবার দেখি সে গাড়ীতে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখা শুরু করে। চুপচাপ রইলাম। সহ্য করা ছিল কষ্টের।

আইনের সাথে কনভেনশন বলেও একটি কথা আছে।এই কনভেনশন আইনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ । যাহ সমাজদেহে শান্তি যোগাতে মোক্ষম ভূমিকায় রয়। যেটা পেশার চর্চ্চায় অভিজ্ঞতা, আর প্রজ্ঞায় অর্জিত। আমাদের চেকপোষ্টে যারা, তারা কি আজ পর্যন্ত চিনল না।রোয়াইঙ্গাদের নৃগোষ্ঠিগত শারীরিক গঠন!

পেশা চর্চ্চায় সে অভিজ্ঞতা, মেধা প্রজ্ঞার মানুষ তারা নিয়োগ পায়নি নিশ্চয়ই ! নইলে আমাদের ভ্যাট, ট্যাক্সের টাকায় যাদের মাসিক মাসোহারা তারা যদি আসল কাজ করে রোয়াইঙ্গারা বাংলাদেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়ল কিভাবে? চট্টগ্রামে বার্মাইয়া কলোনি, আরাকান হাউজিং হইল কেমনে?

রোয়াইঙ্গারা যায়নি? তারা বসতি গড়েনি? এমন কোন ইউনিয়ন আছে অবশিষ্ট? বার্মাইয়া পাড়া।বাঁচা মিয়ার ঘোনা থেকে সমিতি পাড়া, সাগর পাড়,মনখালি, শাপলাপুর, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কোথায় নেই তারা? নামী দামী কোন প্রতিষ্ঠান বাকী রোয়াইঙ্গাদের ছেলেমেয়েরা পড়ে না?

এই চেক পয়েন্টগুলোর আগেই রোয়াইঙ্গারা নেমে পড়ে। গ্রামীণ পথে চেকপয়েন্ট পার হয়ে আবার গাড়ীর যাত্রী বনে।আর যদি গাড়ীতে রোয়াইঙ্গাদের যেতেই হয় কিভাবে যাবে বাঙ্গালীর সেই শিরা উপশিরায় স্যালাইন চালিয়েই যায়।

তখন চাকরীজীবির কর্তব্য পালন চলে আমাদের উপর। কারন উখিয়া টেকনাফবাসী স্বদেশী রক্ষাকারীদের হাতেই আজ তুচ্ছাতোতুচ্ছ, অসহায়। গিনিপিগের ব্যবহারই কপাল লিখন।

গোপনে নিজেরে বুঝায় “আল্লাহ বিচার করবে”।পরিবার বউ, মেয়েটারে নিয়ে দোয়া ইউনুস পড়তে পড়তেই কক্সবাজার যায় আর আসে।চেকের ধরন, তাদের কথা বলার ঢং।এই বুঝি বেইজ্জতি হচ্ছি হচ্ছি।

প্রতিবাদের কি জো আছে? উখিয়া টেকনাফে তৃতীয়শ্রেণির নাগরিক হয়েই যে বেঁচে রই।মুখ খুললেতো খবর আছে?

বাবার সম্পত্তির বাটোয়ারায় ভাইবোন যখন কেউ কাউকে ঠকাতে চায় তখন সে ভাইয়ের চেয়ে পারিবারিক শত্রুকেই আপন ভাবে। বাবার সম্পত্তি নাম মাত্রমূল্যে তুলে দেয় পারিবারিক শত্রুর হাতে।

শত্রুর জ্বালার ভার কম, শত্রুর আচরণ এমন হয় বলে।আপণ যখন জ্বালায় তার ভার বইবার শক্তি মানুষ হারায়।

রক্ষাকারীদের গোপন জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে উখিয়া টেকনাফের মানুষ যদি রোয়াইঙ্গাদের পা ছঁুয়ে বলে বাবারা তোরা আমাদের ক্ষমা কর।আমরা যাহ বুঝছিলাম ভুল। সবি ভুল।

তোরাও আমাদের রক্তের অংশীদার।আরাকানে কামাই করতে যাওয়া আত্নীয়ের আত্নীয়। উখিয়া টেকনাফ আমাদেরই…

তখন রক্ষাকারী দলের একটি গানই রইবে গাইবার.. আমার সোনার ময়না পাখি…
কোনবা দোষে গেলা ছাড়িয়া দিয়া মোরে ফাঁকি…!!!

লেখক – বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ)
উখিয়া কলেজ, উখিয়া কক্সবাজার।
ইমেইল – alamgir83cox@gmail.com