ইফতারের আগে না মারার আকুতি, সেই মোরশেদ হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা

কক্সবাজার প্রতিনিধি :

ইফতারের আগে প্রাণে না মারার আকুতি করা যুবক কক্সবাজারের আলোচিত মোরশেদ আলি ওরফে মোরশেদ বলি হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫।

গ্রেফতারকৃতরা হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়।

রোববার সকাল ১০টায় র‌্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে উপঅধিনায়ক মনজুর মেহেদী ইসলাম সাংবাদিকদের প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কক্সবাজার সদরের পিএমখালীর মাছুয়াখালী নছরত আলীপাড়ার মৃত শফি আলমের ছেলে মতিউল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, আজহারুল ইসলাম এবং বাংলাবাজার এলাকার মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে জয়নাল আবেদীন হাজারী। গ্রেফতার ৪ জনই মুরশেদ হত্যায় সরাসরি অংশ নেয় বলে জানায় র‌্যাব।

মোরশেদ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মালেক, আলালসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব ১৫ এর উপঅধিনায়ক মনজুর মেহেদী ইসলাম জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোরশেদকে নির্মমভাবে লোমহর্ষক হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন। খুনের ঘটনার পরিকল্পনা এবং সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টিও স্বীকার করেছে গ্রেফতারকৃত ৪ আসামি।

খুনিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫ সংবাদ সম্মেলনে আরও জানায়, একটি সেচ প্রকল্প নিয়ে বিরোধের জের ধরে মোরশেদকে শায়েস্তা করতে গত ৭ এপ্রিল চেরাংঘাট বাজারে দিদারের সিমেন্টের দোকানে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মাহমুদুল হক মেম্বার, তার ভাই মোহাম্মদ আলী এবং মেম্বারের ৩ ছেলেসহ সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেদিনই ঘটনা সংঘটিত করা হয়।

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল আরও ৫ আসামি গ্রেফতার করে র‌্যাব-৭। এ পর্যন্ত র‌্যাবের হাতে মোরশেদ আলী হত্যার ঘটনায় ৯ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। ঘটনার পরের দিন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় ৩ জন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ২৬ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে দীর্ঘদিন ধরে পানি সেচ প্রকল্প ইজারা নিয়ে চালিয়ে আসছিল মোরশেদের পরিবার। এটি ভাগিয়ে নিতে নানা অপকৌশল, ছলচাতুরী করছিল একই এলাকার মাহমুদুল হক, জয়নাল, কলিম উল্লাহসহ তাদের গোষ্ঠীর লোকজন। একপর্যায়ে জোর করে তারা দখলে নেয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে পৌঁছে।

হত্যার বর্ণনায় গ্রেফতার ৪ জন জানান, গত ৭ এপ্রিল ইফতারি কেনার জন্য স্থানীয় চেরাংঘর স্টেশনে গেলে সেখানে মোরশেদ বলিকে ঘিরে ধরে তারা। এরপর প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে কুপিয়ে-পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় মোরশেদ ইফতার পর্যন্ত তাকে প্রাণে না মারা আকুতি জানায়। তবুও তাকে মেরে ফেলা হয়।