ইয়াবা তৈরির উপাদান, পাচারের রুট বাংলাদেশ

সমকাল •

ইয়াবা (ফাইল ছবি)

ইয়াবা তৈরির উপাদান অ্যামফিটামিন পাচারের জন্য বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক কারবারি চক্র। তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে মাদক পাচার করে।

বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার।

গত ৯ সেপ্টেম্বর শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম অ্যামফিটামিন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মহাপরিচালক। তিনি জানান, এসব অ্যামফিটামিন মালয়েশিয়া হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাচারের পরিকল্পনা ছিল। মাদকের চালান জব্দ করতে নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিমানবন্দরে ‘ডগ স্কোয়াড’ মোতায়েনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসগুলোকে স্ক্যানার মেশিন বসাতে বলা হয়েছে, যাতে তারা অবৈধ পণ্যের উপস্থিতি শনাক্ত করতে পারে। এরই মধ্যে কেউ কেউ মেশিন বসিয়েছে বলে জানিয়েছে। শিগগিরই তাদের কার্যালয়ে গিয়ে স্ক্যানারের কার্যক্রম পরীক্ষা করা হবে। যারা এখনও স্ক্যানার স্থাপন করেনি, তাদেরও অনতিবিলম্বে তা করতে হবে। নইলে তারা এর জন্য দায়ী হবে।

বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে অ্যামফিটামিন জব্দের পরদিন বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- ‘মূল হোতা’ মিটফোর্ডের রাসায়নিক সামগ্রী ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ ওরফে বান্টি, রেজাউল হক বাবলু, জুনায়েদ ইবনে সিদ্দিকী, নজরুল ইসলাম, বাবুল মজুমদার, মো. মাজেদ ও মো. বাপ্পী। এর আগে অ্যামফিটামিন জব্দের সময় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মহাপরিচালক জানান, বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের রাসায়নিক ব্যবসায়ী হাবিব মাস্টারের কাছ থেকে অ্যামফিটামিন আনা হয় বলে বান্টি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। হাবিবের সহযোগী রাজখান চালানটি বাংলাদেশে পাঠান। পরে এদেশীয় একাধিক কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে তা ঢাকায় আনা হয়। এর পর দীন ইসলাম ও সাইফুলের মাধ্যমে বান্টি অ্যামফিটামিনের চালানটি জুনায়েদ ও নজরুলের কাছে বিক্রি করে। দীন ও সাইফুলকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি।

প্রায় ২৪ কোটি টাকার অ্যামফিটামিন জব্দের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কুরিয়ার সার্ভিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, এ মামলার তদন্ত এখনও চলছে। বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে মাদক পাচারের ঘটনা এটিই প্রথম নয় বলে জানান তিনি।

২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার অ্যামফিটামিন আমদানি নিষিদ্ধ করে। তার পরও অবৈধভাবে অ্যামফিটামিন দেশে আসছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোকে (এনসিবি) এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে।