ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চালু হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর

ডেস্ক রিপোর্ট ◑ করোনা মহামারির কারণে কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর অভ্যন্তরীণ রুটে আবার ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে মাসখানেক ধরে। কিন্তু করোনা শঙ্কার ফলে দিন যতই যাচ্ছে যাত্রী সংখ্যা ততই যেন কমছে। তবে আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বাড়তে পারে যাত্রী; এমন পরিস্থিতিতে দেশের গুরুত্বপূণ জেলা শহর কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু করার প্রস্তুতি চলছে।

এরই মধ্যে কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু করার প্রস্ততি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বুধবার বলেন, দেশের কোভিড প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলছে। এ কারণে মানুষের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। একেবারে প্রয়োজন ছাড়া ফ্লাইটে ভ্রমণ করছে না। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে কিছু যাত্রী আসছেন। যাত্রীদের আস্থা আসতে আরও সময় লাগবে।

তিনি আরও বলেন, আসন্ন কোরবানির ঈদে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে বাড়বে যাত্রীদের যাতায়েত। এ কারণে এই ঈদের আগেই কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু করার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া বরিশাল ও রাজশাহী বিমানবন্দরও চালু হবে।

জানা গেছে, করোনা মহামারি ঠেকাতে গত ২১ মার্চ থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয় বেবিচক। তবে গত ১ জুন ঢাকা থেকে সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট রুটে সীমিত পরিসরে ৭৫ শতাংশ যাত্রী নেওয়ার শর্তে ফ্লাইট চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স , বেসরকারী ইউএস বাংলা, ও নভো এয়ারকে আসা-যাওয়া মিলিয়ে ৪৮টি ফ্লাইট পরিচালনার কথা ছিল। কিন্তু যাত্রী–সংকটের কারণে ১ জুন ঢাকা-সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে দুটি ফ্লাইট চালানোর পর বন্ধ হয় বিমানের অভ্যন্তরীণ সব রুটের ফ্লাইট। ১১ জুন থেকে যশোরে ফ্লাইট চালু হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রতিটি ফ্লাইটে ৭৫ শতাংশ যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী ৭৪ আসনের উড়োজাহাজে ৫০ জনের মতো যাত্রী বহন করার কথা। সেখানে প্রতি ফ্লাইটে যাত্রী মিলেছে গড়ে ২৭-৩০ জন। এই সময়ে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। প্রথম দিকে টিকিটের মূল্যে ছাড় দিয়ে যাত্রী পাওয়ার চেষ্টা করেছিল বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো। কিন্তু যাত্রীদের ভীতি দূর হয়নি। পরে সব রুটেই সর্বনিম্ন ভাড়া ২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু যাত্রী না পাওয়ায় লোকসানের বোঝা ভারী হচ্ছে।

বর্তমানে ঢাকা থেকে চারটি রুটে বেসরকারী ইউএস বাংলা ও নভোএয়ারের প্রতিদিন ৪৮টি ফ্লাইট পরিচালনার কথা। কিন্তু যাত্রী–সংকটে প্রতিদিনই একাধিক ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম রুটে খুব একটা যাত্রী মিলছে না। কারণ, বন্দরনগরীর করোনা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। এ ছাড়া যশোরে শুরুতে যাত্রী পাওয়া গেলেও খুলনা বিভাগের করোনা পরিস্থিতির বেশ অবনতি হয়েছে। তবে সৈয়দপুর রুট তুলনামূলক কিছুটা ভালো। কারণ, অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর মধ্যে ঢাকা-সৈয়দপুরের দূরত্ব সবচেয়ে বেশি। দ্রুত নিরাপে যাওয়ার কারণে এই রুটে যাত্রী কিছুটা বেশি পাওয়া যাচ্ছে।

এ ব্যপারে বেসরকারি ইউএস–বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ভয় বাড়ছে। বিদেশ থেকে দেশে আসছেন কম যাত্রী। তা ছাড়া দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়নি। খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভ্রমণ করছেন না। তবে কোরবানির ঈদে দেশের অভ্যন্তরীণ আকাশ বাড়বে বিভিন্ন যাত্রীদের যাতায়েত। আসন্ন কোরবানির ঈদের আগে বরিশাল, রাজশাহী ও কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু হলে কিছুটা লাভের মুখ দেখার সম্ভবনা রয়েছে অভ্যন্তরীণ রুটের বিমান সংস্থাগুলোর বলে জানান তিনি।