উখিয়ায় মাদক কারবারে সক্রিয় সিন্ডিকেট হাসেম ও রোহিঙ্গা অলি

এম ফেরদৌস, উখিয়া :

  • * রোহিঙ্গাদের সাথে স্থানীয়দের আঁতাত
  • * শেল্টারদাতা স্থানীয় প্রভাবশালী
  • * আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি জরুরী

বেশ কিছুদিন যাবৎ মায়ানমার সীমান্ত উত্তেজনা থাকায় মাদকসহ অন্যন্য চোরাইমাল আসা বন্ধ থাকলেও নতুন করে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের যোগসাজশে মাদকসহ অন্যন্য চোরাইমাল পাচার এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে। মাদক কারবারে জড়িত অনেক নতুন ও পুরাতন সিন্ডিকেটদের আনাগোনাও বেড়েছে। সক্রিয় হয়েছে ছোট বড় কারবারিরা।

অভিযোগ উঠেছে, উখিয়া কুতুপালং এলাকার মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আবুল হাসেম ও তার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী রোহিঙ্গা অলি ও একরামের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে জানা যায়, আবুল হাসেম একজন চিহ্নিত মাদক কারবারী। তিনি মাদক পাচারকালে বেশ কয়েকবার প্রশাসনের হাতে আটক হয়ে কারাভোগ করেছিল। বর্তমানে তিনি জামিনে এসে কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা অলি’র মাধ্যমে তার মাদকব্যবসা পরিচালনা করছেন। সিন্ডিকেট ভারী করতে নতুন করে এন্ট্রি করেছেন কুতুপালং এলাকার একরাম নামে এক যুবককেও।

কুতুপালং রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় স্থানীয় ও রোহিঙ্গা আঁতাত করে মাদক কারবারসহ মায়ানমারের বিভিন্ন চোরাইপন্য পাচারে গড়ে তুলেছে একাধিক সিন্ডিকেট। তার মধ্যে অন্যতম আবুল হাসেম ও রোহিঙ্গা অলির সিন্ডিকেট।

অভিযুক্ত সিন্ডিকেট প্রধান আবুল হাসেম ও রোহিঙ্গা অলি’র মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরেও তাদের মন্তব্য নিতে ব্যার্থ হয়।

প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে তারা দীর্ঘদিন এসব অপকর্ম চালিয়ে নিচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছে, তাদের কোন দৃশ্যমান আয়ের উৎস নেই। চলাপেরা ভাব-সাব অন্য লেভেলের। কুতুপালং এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি তারা। রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন কালোবাজারিতে জড়িয়ে পড়েছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর নজরদারিতে তাদের এসব অবৈধ কারবারের গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা জানান, লম্বাশিয়া ক্যাম্পের অলি মাসে কয়েকবার বর্মা যাওয়া আসা করে। সে ইয়াবা ব্যবসা করে বহুদিন আগে হতে। কুতুপালং এর স্থানীয় কিছু নামী দামী ব্যাক্তির সাথে তার সু-সম্পর্ক আছে। এদের নিয়া অলি ইয়াবার বড় বড় চালান বর্মা থেকে এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে।

প্রশাসনিক সুত্র বলছে, রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তি জড়িয়ে বর্তমানে বিভিন্ন ক্রাইম চালিয়ে আসছে এটা সত্য। মাদকসহ বিভিন্ন খারাপ কাজে লিপ্ত হচ্ছে তারা । কিন্তু সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ ছাড়া কাউকে আটক করার ক্ষমতা নেই। তবে অপরাধী যেই হউক না কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তাকে ধরা দিতে হবে। তাদের বিষয়ে খোজ নেওয়া হচ্ছে। প্রকৃত কারবারি হলে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

সচেতন মহল বলছে, রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে স্থানীয় লোকালয়ে অবস্থান করার সুযোগে তাদের স্পর্ধা বেড়ে যাচ্ছে। তাদেরকে পুঁজি করে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের আখের গোছাতে দেশের আনাছে কাছে মরণনেশা মাদক ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে উঠতি বয়সি যুবকরা এসব কালো জগতে পা বাড়াচ্ছে। প্রশাসনের প্রতি দাবি থাকবে রোহিঙ্গাদের সাথে স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা পেলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।

এদিকে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম হোসেনের স্পষ্ট কথা,কোন অপরাধীদের উখিয়া থানা পুলিশ ছাড় দিবে না। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে।