উখিয়ায় আলুর বাম্পার ফলন স্বপ্ন দেখাচ্ছে কৃষকদের

আবদুল্লাহ আল আজিজ, কক্সবাজার জার্নাল •

কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলা ধান চাষের জন্য খ্যাত। তবে অধিক লাভের আশায় এই অঞ্চলের কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দিন দিন রবি ফসল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। চলতি রবি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাচ্ছেন। যার কারণে এখন কৃষকের চোখেমুখে হাসির ঝিলিক ফুটিয়ে তুলেছে, মনে দোলা দিচ্ছে স্বপ্ন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অধিকাংশ মাঠ জুড়েই এখন শোভা পাচ্ছে আলুর গাছের সবুজের সমারোহ। চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলুর চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৬০ হেক্টর জমিতে কিন্তু চাষ হয়েছে ১৮০ হেক্টর জমিতে। টােটাল ফলন হয়েছে ৩২৪০ মেঃটন।

কৃষকরা কৃষি অফিসের পরামর্শে অধিক ফলনশীল জাতের কাটিনা ডায়মন্ড, উফসি ও স্থানীয় জাতের আলু চাষ করেছেন। যদিও উপজেলাতে এখনও পুরোদমে জমি থেকে আলু তোলা শুরু হয়নি। তবুও যেসব কৃষক আগাম জাতের আলু চাষ করেছিলেন তারা আলু তোলা শুরু করেছেন। আর কয়েকদিন পর পুরোদমে আলু তোলা শুরু হবে। তবে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় কৃষকরা প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫-২০ টন আলুর ফলন পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে বাজারে আলুর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় চাষিরা আলু কয়েক দফার বন্যায় আমন ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।

ভালুকিয়া পালং এলাকার চাষী আলমগীর বলেন, এবার আলুর গাছ আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। জমিতে এবার রেকর্ড পরিমাণ আলুর ফলনের আশা করছি। আলুর বাম্পার ফলন ও ভালো দামে পূর্বের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো। এছাড়া কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতা আর পরামর্শের কারণে আলুর তেমন কোনও রোগ হয়নি।’

কোটবাজার কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুণ জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর আলুর ফলন ভালো হয়েছে। কেজিতে বিক্রি হচ্ছে গড়ে ২৬ থেকে ২৮ টাকা দরে। প্রতিদিন এ বাজার থেকে কমপক্ষে ৪-৫ টন আলু চলে যায় বিভিন্ন বাজার ও পাইকারি আড়তে।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, চলতি রবি মৌসুমে কৃষকরা যাতে রবিশস্য চাষ করে ভালো ফলন পান সেজন্য উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বল্প খরচে ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি।’

এছাড়া কৃষি অফিসের তৎপরতা ও কৃষকদের আগাম প্রস্তুতির কারণে আলুর ক্ষেতের তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া আলুর বাজার ভালো আছে। তাই কৃষকরা আলু থেকে ভালো লাভবান হবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।’