উখিয়ায় নির্বাচনী উত্তাপ বাড়ছে

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া :


উখিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে উত্তাপ বাড়ছে। সে সঙ্গে বাড়ছে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা। কোথাও পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে আবার কোথাও অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি এবার মেম্বারদের মধ্যেও অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে।

৬ নভেম্বর (শনিবার) উখিয়া রাজাপালং ২ নং ওয়ার্ডের দুই বারের সফল মেম্বার সালাহ উদ্দিন। এবারও মেম্বার পদপ্রার্থী সালাহ উদ্দিনের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানীত হয়ে তার প্রতিপক্ষ শাহনেওয়াজ গ্রুপের হামলার শিকার হয়েছেন। বর্তমানে তিনি চট্রগ্রামে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনায় রাজাপালং ২ নং ওয়ার্ডে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তাৎক্ষনিকভাবে শাহনেওয়াজ সাংবাদিকদের তার প্রতিক্রিয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন এটি পরিকল্পিত হামলা। এ হামলায় তার সমর্থীত মহিলাসহ একাধিক আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আচরণে ভোটাররা নতুন করে চিন্তা ভাবনা করছেন।

রোহিঙ্গা অধধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় নির্বাচনে অস্ত্রের মহড়া নিয়েও শিঙ্কিত ভোটার ও প্রার্থীরা। উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমেদ সন্জুর মোরশেদ বলেন, নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতনতা মূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে।

হলদিয়া পালং ইউনিয়নে চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা সবাই আওয়ামী লীগের। গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, ইমরুল কায়েস চৌধুরী, আমিনুল হক আমিন ও বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ আলম। নৌকায় ভোট না দিলে কবরস্থানে কবর দিতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম। গত ১ নভেম্বর রাতে ৯ নং ওয়ার্ডের মনির মার্কেট এলাকায় নির্বাচনী অফিস উদ্ভোধনকালে নৌকা মার্কার প্রার্থী শাহ আলম এই ঘোষনা দেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন, যারা যারা নৌকায় ভোট দেবে না তাদের চিহ্নিত করা হবে। তাদেরকে কবরস্থানে কবর দিতে দেওয়া হবে না। এটা আমার কবরস্থান। সোজা কথা, আমার কবরস্থানে তাদেরকে কবর দিতে দেওয়া হবে না। তাদেরকে চৌধুরী পাড়ায় নিয়ে কবর দিতে হবে। এমনকি তাদের মসজিদেও নামাজ পড়তে দেওয়া হবে না।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহ আলম এটিকে তার প্রতিপক্ষ এরকম বক্তব্য মোবাইলে ধারণ করে এডিট করার পর অপপ্রচার চালিয়েছে বলে জানান।

রত্নাপালং ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল হুদার পক্ষে বর্তমান চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী প্রকাশ্যে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল কবির চৌধুরীকে লাথি মেরে পেট ফাড়ি ফেলাইয়ম বলে যে হুমকি দিয়েছেন তাতে নৌকা প্রতীকের ভোট কমেছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

এভাবে চলতে থাকলে নৌকার যেমন ভোট কমার সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি অনাকাঙ্খিত ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণ ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদে ভোট দিতে চায় আর প্রার্থীরা যে কোন উপায়ে বিজয় নিশ্চিত করার নানান কৌশলে রয়েছেন।