উখিয়ায় বনের গাছ কাটছে রোহিঙ্গারা : অস্থিত্ব সংকটে সামাজিক বনায়ন

পাহাড় কেটে বসতি গড়ে তুলেছে রোহিঙ্গারা। জ্বালানির জন্য কাঠ সংগ্রহ করে ফিরছেন এক রোহিঙ্গা। বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প, উখিয়া, কক্সবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক – রোহিঙ্গারা বন থেকে জ্বালানী সংগ্রহ করায় সামাজিক বনায়ন উজাড় হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা শতশত রোহিঙ্গা রোহিঙ্গা নিকটস্থ বনসম্পদ ও অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে গড়ে তোলা সামাজিক বনায়নের মুল্যবান গাছ-গাছালি নির্বিচারে কর্তন করে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা সামাজিক, পশুখাদ্যও এসআর নামের সরকারি অংশিদারিত্বের বাগানে রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে কর্তন করে ক্যাম্পে বিক্রি করছে।

উখিয়া সদর রেঞ্জের আওতাধীন ১৪টি বনবিটের শতাধিক বনকর্মী বনসম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকলেও তাঁরা এ ব্যাপারে নির্বিকার বলে বাগান মালিক ও স্থানীয় পরিবেশ বাদীদের অভিযোগ।
গত ১৯ মার্চ সকাল ৯টার দিকে ২০-৩০ জনের রোহিঙ্গার দল মুছার খোলার জামবনিয়া এলাকায় সৃজিত সামাজিক পশুখাদ্য, এসআর ৪০ হেক্টরের বাগানে ঢুকে নির্বিচারে প্রকাশ্যে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

মুছার খোলার টহল ফাঁড়ির দায়িত্বরত আবুল কাশেম জানান, সামাজিক বনের মালিক নজির আহমদের পুত্র আনোয়ার হোসেন সহ বাগানে গিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে গাছ কাটা থেকে বিরত থাকার জন্য নিষেধ করা হয়। কিন্তু তারা উল্টো টহলদলকে প্রাণ নাশের হুমকি দিলে অপরাগতায় চলে আসতে হয়।
উখিয়ার পালংখালী বনবিটস্থ মুছারখোলার টহল প্রধান আবুল কাশেম বনসম্পদ রক্ষায় আলাপ করে জানাগেছে, অল্প লোকবল নিয়ে শতশত রোহিঙ্গাদের গাছ কর্তনে বাধা দেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
সামাজিক বনায়নের গাছ-গাছালি রক্ষার্থে বন রক্ষা সহায়ক কমিটির পাহারাদার সদস্যরা রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকবার লাকড়ি সংগ্রহে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এসময় রোহিঙ্গারা তাদের উপর ক্ষেপে গিয়ে হামলা করার চেষ্টা করলে আত্মরক্ষার্থে পাহারা দলের সদস্যরা নির্বিকার অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে চলে আসতে বাধ্য হয়।
মিয়ানমার সেনাদের দমন নিপীড়নের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে আসা প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ৫ হাজার একর বনভূমি দখল করে আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন সরকার-বেসরকারি এনজিও সংস্থা ও দাতা গোষ্টি এসব রোহিঙ্গাদের খাদ্য, বস্ত্র, ওষুধ সহ অন্যান্য কিছু সরবরাহ করলেও রান্নার জন্য জ্বালানী সরবরাহ করেনি।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন এনজিও সংস্থা কৃত্রিম উপায়ে তৈরী লাকড়ি সরবরাহ করলে সামাজিক বনায়ন ও বনসম্পদ অনেকটা রেহাই পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তা না হলে এসব রোহিঙ্গারা এখানে দীর্ঘস্থায়ী বসবাসের সুযোগে বনসম্পদ ও সামাজিক বনায়ন উজাড় করে ফেলবে রোহিঙ্গারা। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

এদিকে জামবনিয়া সামাজিক বনায়নের অংশিদার আনোয়ার হোসেন জানান, হেলাল উদ্দিন, সৈয়দ আকবরও সাহাব উদ্দিন সহ একাধিক বাগান মালিক সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করা প্রস্তুতি চলছে।