উখিয়ায় ব্যাটারিচালিত রিকশায় বাড়ছে দুর্ঘটনা

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া •


উখিয়ায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ করার জোর দাবি উঠছে। কেন ব্যাটারিচালিত রিকশা বড় রাস্তায় নিষিদ্ধ? এর উত্তর খুঁজতে বেশিদূর যেতে হবে না।

প্রথমত প্রতিদিন একটি রিকশা এসির সমান বিদ্যুৎ নিচ্ছে। তার ওপর রাস্তায় চালাতে গিয়ে হরহামেশা দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। কারণ তারা অনেক সময় তাদের ব্রেক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। মাঝেমধ্যে এরা গাড়ি কিংবা বাসকে ওভারটেক করতে চায়। তাই বলে কি এই ব্যাটারিচালিত রিকশায় প্যাসেঞ্জার চড়ছে না?

দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য অনেকেই এই ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়ছে। কিন্তু ভাড়াও নিচ্ছে কম নয়। কারা এই ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাচ্ছে? এ বিষয়ে বেশ কিছু রিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মূলত শারীরিক পরিশ্রম কমানোর জন্যই এই রিকসা চালায়। আয়-রোজগারও ভাল।

উখিয়াতে একেকজনের বেশ কিছু ব্যাটারিচালিত রিকশা আছে। এনজিওতে চাকরি করেন এমন এক ব্যক্তির ১০ টি ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে।

প্রতিদিন প্রতিটি রিকশার জমা পাচ্ছে ৩০০ টাকা। আর তার রিকশা চলে কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পসহ কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা হতে থাইংখালী এবং কোটবাজার সোনারপাড়া হয়ে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইনানী সমুদ্র সৈকত এলাকার ভেতরে। প্রতিটি রিকশা চালককে ওইভাবে বলে দেওয়া আছে। তার দৃষ্টিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা যাতায়াতের জন্য ভালো।

শুধু তাই নয়, একজন রিকশা চালকের জন্যও ভালো। তাকে বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। পায়ে চালিত রিকশা চালাতে চালককে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তার বেশি ঘাম হয়, অল্প সময়ে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক জসিম উদ্দিন বলছেন, সরকার যদি রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করত তা হলে অনেক ভালো হতো। এমনকি তাদের যদিলাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিত তা হলে অনেক ভালো হতো।

এ ব্যাপারে আরও একজন ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক জানান, বর্তমানে তো বিদ্যুতের কোনো ঘাটতি নেই। তা হলে বিদ্যুৎ খরচ নিয়ে এত প্রশ্ন কেন? বিদ্যুৎ খরচের জন্যে নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল দেওয়া হচ্ছে। তা হলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধের কথা আসে কেন?

রাজা পালং এলাকার শেখ রাকিব জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশা দুর্ঘটনায় আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। আমার আরেক বন্ধু সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত টমটমের আঘাতে পঙ্গুত্ব বরণ করতে যাচ্ছে। মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও চট্রগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ সব দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া দরকার। স্থানীয় যুবক সেলিম উদ্দিন বলেন, গত সপ্তাহে সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদারকে ব্যাটারিচালিত রিকশা (টমটম) ওভারটেক করে প্রচন্ড আঘাত করলে তাকেও চট্রগ্রাম বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

এভাবে অসংখ্য মানুষ ব্যাটারিচালিত রিকশার অদক্ষ চালকের কারণে নিহত,আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর অসহনীয় জীবন-যাপন করছেন।

তাই উখিয়ায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। ব্যাটারিচালিত রিকশা অনিরাপদ মনে করছেন শিক্ষক জানে আলম।

তাই তিনি বলেন, কোনো অবস্থাতেই কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলকে বৈধতা দেয়া উচিত না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা।