উখিয়া আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়- আমিমুল এহসান খান

উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিমুল এহসান খান।

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া •

সীমাহীন অনিয়মের অফিস ছিল উখিয়ার ভূমি অফিস। যেখানে একটি খতিয়ান করতে লাগতো লাখ টাকা। দালালরা এখানে গিজ গিজ করতো।

ভুক্তভোগিরা দালালদের পিটিয়ে মাথা ফেটে দিয়েছিল। তবুও থেমে থাকতো না ঘুষ ও দুর্নীতি। এমনই এক সময়ে এক বছর পাঁচ মাস আগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিমুল এহসান খান যোগদান করে ডিজিটাল ব্যানারে লিখে দিলেন আমি ও আমার অফিস দুর্নীতি মুক্ত। সাংবাদিকসহ উখিয়ার সচেতন মহল তাকে পর্যবেক্ষণে রাখলেন। দেখলেন এবং অবশেষে বললেন তিনি পেরেছেন, পারবেন তার আগামীর পথ চলা হোক এমনই সুন্দর ও জন-কল্যাণকর। তার সময়ে পেয়েছেন সেবা ও সম্মান। তার বিদায়ের কথা শুনে উখিয়াবাসি কেঁদেছেন।

বিদায়ের বেলায় তার কাজের মূল্যায়ন করতে গিয়ে উখিয়া অনলাইন প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিউল ইসলাম আজাদ বলেন, উখিয়াবাসি এমন অমায়িক ব্যবহারের অধিকারি সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিমুল এহসান খানের কথা মনে রাখবে। কারণ তিনি একজন জনবান্ধব অফিসার ছিলেন। কখনো তার কাছে বিরক্তিবোধ দেখিনি৷ চাকরির কারনে এবার উখিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছেন উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিমুল এহসান খান (AC Land Ukhiya)।

তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধান তথ্য কমিশনারের একান্ত সচিব হিসেবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তথ্য কমিশনে যোগদান করবেন।

উখিয়ায় যোগদানের এক বছর পাঁচ মাসের মাথায় বদলির চিঠি পেলেন এ কর্মকর্তা। হঠাৎ তথ্য মন্ত্রণালয়ে বদলির চিঠিতে তিনি উচ্ছ্বসিত হলেও হতাশ উখিয়ার সাধারণ মানুষ। কারণ একজন জনবান্ধন এ্যাসিল্যান্ডকে হারাতে বসেছেন উখিয়াবাসী।

যোগদানের পর থেকে এক বছর পাঁচ মাসের পুরো সময়টি তিনি উখিয়ার মানুষের জন্য যথাযথভাবে ব্যয় করেছেন। রাত-বিরেতে বিরামহীন ছুটেছেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে, ভেজাল বিরোধী অভিযানে, পাহাড় নিধন দমনে, করোনা সংক্রমণ রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে, করোনাকালীন সময়ে সহায়তা সামগ্রী নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায়ও ছুটেছেন সমানতালে।

শুধু তাই নয়, অন্যান্য সময়ের তুলনায় গত ১৭ মাস উখিয়া ভূমি অফিস ছিলো অনেকটাই দালাল মুক্ত। প্রান্তিক মানুষের জন্য ছিলো উন্মুক্ত। পেয়েছেন যথাযথ সেবা।

উখিয়া মালভিটাপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমিমুল এহসান খানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেড মহোদয় একজন সৎ অফিসার ছিলেন এবং উখিয়া উপজেলা ভুমি অফিসের সকল নথি ডিজিটাল পদ্ধতিতে সাজিছিলেন। উনি বদলী জনিত কারনে অন্যত্র চলে গেলেও উখিয়া বাসী আজীবন স্বরন রাখবে তাকে। তিনি নিজে ও তাহার অফিস দূর্নীতি মুক্ত রেখেছেন। তাহার উত্তোরোত্তর সফলতা ও পদোন্নতি কামনায় দোয়া রইল।

সুশাসনের জন্যে নাগরিক সুজনের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, সরকারি অফিসাররা জনগণের সেবক। তিনি তার সেবা ও সততা দিয়ে উখিয়াবাসির মনে স্থান করে নিয়েছেন।

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, তার মত দক্ষ ও সৎ অফিসার বাংলাদেশের প্রতিটি অফিসে বিদ্যমান থাকুক। এমনটাই জনতার প্রত্যাশা। আমি তার সফলতা ও নিরাপদে পথ চলায় আল্লাহর সাহায্য কামনা করছি।

উখিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আমিমুল এহসান খান বলেন, আমি চেষ্টা করেছি সর্বোত্তম সেবা দেয়ার জন্যে। উখিয়া আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে অনেক কিছুই শিখেছি। মানুষের শেখার কোনো শেষ নেই।