একজন কর্মবীর

সাইফুল আশরাফ (জয়):

৭ই মার্চ ১৯৭১। রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ বাঙ্গালীর শত শত বছরের শৃংখল মুক্তির ঐতিহাসিক ঘোষনা। একটি ভাষন বদলে দেয় মানচিত্র,বিশ্ববুকে রচিত হয় লাল সবুজ খচিত একটি নাম বাংলাদেশ।
গতবছর (২০১৮ইং) এই মহান স্বাধীনতার মাসে (৭ মার্চ) কক্সবাজার জেলার দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন মো: কামাল হোসেন স্যার। দায়িত্বভার গ্রহণের আগে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি এবং মহান শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। এর পরপরই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও শিশু একাডেমীর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন স্যার। এরপর কেটে গেলো তাঁর কর্মময় একটি বছর।

গত এক বছরে একজন জেলা প্রশাসক কিভাবে গণমানুষের প্রাণে অনুরনিত হয় তার প্রমাণ মিলেছে স্যারের কর্মতৎপরতায়। কক্সবাজার জেলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ, মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মহেশখালী এল.এন.জি টার্মিনাল, নৌবাহিনীর সাব-মেরিন ঘাটি নির্মাণ প্রকল্পসহ ৭৪টি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এ সমস্ত প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের মাঝে তিনি দ্রুততার সাথে ক্ষতিপূরণের টাকা বিতরণ করছেন।

বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত অসহায় ১০ লাখ মায়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে মানবতার মা হিসেবে বিশ্বে সুপরিচিতি লাভ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আশ্রিতদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ও দেশী-বিদেশী এনজিওদের সমন্বয়ের কাজ বিরামহীনভাবে করে যাচ্ছেন তিনি।

জেলার সুযোগ্য প্রশাসক মো: কামাল হোসেন স্যার জেলার সামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সার্বিক উন্নয়নেও পরিবর্তন আনয়নের জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁর সুবিচক্ষনতায় তা বাস্তবায়ন করছেন। জেলার সকল স্তরের জনগণের মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিপ্রদান, অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক সহায়তায় ব্যবস্থাগ্রহণে কক্সবাজার ফাউন্ডেশনকে ঢেলে সাজানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অটিজম শিশুদেরমাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এবং সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করছেন হিলটপ সার্কিট হাউজের নিচে “অরুণোদয়” নামক স্কুল। কবিতা চত্ত্বর থেকে কলাতলী পর্যন্ত সম্পূর্ণ বীচ সিসি ক্যামেরা দিয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। সস্প্রতি বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া প্রায় তিন হাজার পর্যটককে কক্সবাজারে ফিরিয়ে এনে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন জেলা প্রশাসক স্যার। গণশুনানির মাধ্যামে প্রতিদিন শত শত মানুষের নানা সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন। বিরামহীনভাবে সকাল ৯ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত নাগরিক সেবায় নিজেকে

ব্যাস্ত রাখছেন। অসীম ধৈর্য আর নাগরিকদের প্রতি অনন্ত ভালোবাসা না থাকলে এত কাজ এত সুচারুভাবে করা সম্ভব না।
রোহিঙ্গাদের কারনে সৃষ্ট সামাজিক এবং আর্থিক সমস্যাগুলো নির্ধারন করে স্থানীয় জনগণের দাবী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সহ সরকারের সব দপ্তরে গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন করছেন। মোদ্দাকথা চলমান গ-ি পেরিয়ে নিজের সততা, কর্মদক্ষতা এবং দায়িত্ববোধের মাধ্যামে গত এক বছর ধরে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছেন। আগামী বছর গুলোও এমন দীপ্যমান হোক এই প্রত্যাশা।


লেখকঃ সাইফুল আশরাফ (জয়), সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, কক্সবাজার