কক্সবাজারে এক লক্ষ ইয়াবা পাচার : ৪ রোহিঙ্গার যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

এক লক্ষ পিচ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় ৪ রোহিঙ্গাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে দন্ডিত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ এ রায় ঘোষণা করেন। একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন এ তথ্য জানিয়েছেন।

রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী এবং আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।

দন্ডিত আসামীরা হলো : মৃত আবু বকর ও আমেনা খাতুনের পুত্র রোহিঙ্গা মোঃ কবির আহমদ, হাবিব উল্লাহ ও মৃত নাজমার পুত্র রোহিঙ্গা মোঃ নবী, মৃত নুর মোহাম্মদ ও ছকিনা খাতুনের পুত্র রোহিঙ্গা মোঃ ফয়সাল এবং মৃত আবু সুফি ও সামসুন নাহারের পুত্র রোহিঙ্গা মোঃ রহমত উল্লাহ। দন্ডিতরা সকলেই মায়ানমারের আকিয়াব জেলার মংডু থানার মনি পাড়ার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :
২০১৯ সালের ২১ আগস্ট শেষ রাত ৩ টা ১৫ মিনিটের দিকে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের গোল্লার চরের কাছাকাছি একটি ইঞ্জিন চালিত বোট মায়ানমার থেকে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় পৌঁছালে টেকনাফ কোস্ট গার্ডের একটি টিম ইঞ্জিন চালিত বোটটি থামিয়ে বোটে থাকা ৪ রোহিঙ্গাকে আটক করে। পরে আটককৃতদের দেখানো মতে বোট হতে বস্তাভর্তি এক লক্ষ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় কোস্ট গার্ডের পেটি অফিসার এম. এ খালেক বাদী হয়ে উল্লেখিত ৪ জন রোহিঙ্গাকে আসামী করে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৩৬, তারিখ : ২১/০২/২০১৯ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ১০৮/২০১৯ ইংরেজি (টেকনাফ) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৯৭৬/২০২১ ইংরেজি।

২০২১ সালের ১ নভেম্বর মামলাটি চার্জ (অভিযোগ) গঠন করে বিচারকার্য শুরু করা হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল ও আলামত পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি বিচারের মঙ্গলবার দিন ধার্য করা হয়।

রায়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ১০(গ) ধারায় ৪ জন আসামীকে দোষী সাব্যস্থ করে প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একইসাথে দন্ডিত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।