কক্সবাজারে গৃহহীনদের জন্য ১০৯টি বাড়ি প্রস্তুত

এম. বেদারুল আলম :

দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন গ্রামীন অবকাঠামোগত রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দ দ্বারা গৃহহীনদের দূর্যোগ সহায়ক ১০৯টি বাড়ি নির্মান শেষ পর্যায়ে।

সারাদেশের সাথে কক্সবাজারে অনুমোদিত ১০৯টি বাড়ির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামি ১৩ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উক্ত প্রকল্পের উদ্ধোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ রইস উদ্দিন। ইতোমধ্যে বাড়ি নির্মানের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা জানান, ২ মাস আগে বাড়ি নির্মানের কার্যক্রম শুরু হয়। ইতোমধ্যে কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ১৩ অক্টোবর সারা দেশে উক্ত প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন সেহেতু আগামি ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলার ১০৯টি বাড়ির নির্মান কাজ শেষ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে মাত্র ৫দিন সময় পাচ্ছেন কর্মকর্তারা। ৮ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বাড়ি নির্মান কাজের অগ্রগতি বিষয়ে উক্ত কর্মকর্তা বলেন, আমি সরেজমিনে কয়েকটি উপজেলা পরির্দশন করেছি। এরমধ্যে টেকনাফ, উখিয়া, রামুতে নির্মিতব্য বাড়ি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। কাজের মান সন্তোসজনক বলা যায়। প্রধানমন্ত্রীর অত্যান্ত অগ্রাধিকার প্রকল্প যেহেতু অসহায়দের সহায় হবে বাড়িসমুহ। প্রতিটি বাড়ির জন্য কাবিখা টিআর প্রকল্পের আদলে তদারকি কমিটি করা হয়। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন কমিটির সার্বিক তত্বাবধানে ১০৯টি বাড়ি নির্মান করা হচ্ছে ফলে অনিয়মের সুযোগ থাকবেনা।

জানা যায়, গৃহহীনদের জন্য নগদ টাকায় দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মান করার উদ্যোগ নেয় সরকার। সরকারের আমার গ্রাম আমার শহর নির্বাচনী ইশতেহারের ঘোষণা অনুযায়ি এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন গ্রামীন অবকাঠামোগত রক্ষণাবেক্ষণ( টিআর) এবং অবকাঠামো সংস্কার ( কাবিটা) কর্মসূচির বিশেষ বরাদ্দ দ্বারা গৃহহীনদের দূর্যোগ সহায়ক উক্ত ১০৯টি বাড়ি নির্মান করা হচ্ছে।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্ঠনির আওতাভুক্ত টিআর ও কাবিটার বিশেষ খাতের অর্থ দ্বারা দরিদ্রদের জীবনমান উন্নয়ন ও দূর্যোগে নিরাপত্তা হ্রাসকল্পে গৃহহীন পরিবারের জন্য দূর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মান করা হচ্ছে। নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয় যে সব দরিদ্র পরিবারের উচুঁ ভিটা আছে কিন্তু টেকসই ঘর নেই তাদের জন্য ৮শ বর্গফুট ( প্রায় ২ শতাংশ জমি) বাড়ি, একটি রান্নাঘর, টয়লেট যেটি ২কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা টিনসেট ঘর হচ্ছে। এতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, সোলার প্যানেল এবং পাশে টয়লেট থাকছে যাতে রাতে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

জেলা প্রশাসনের ত্রাণ শাখায় মন্ত্রনালয় থেকে প্রেরিত বরাদ্দপত্র থেকে জানা যায়, প্রতিটি বাড়ির নির্মানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৫’শ ৩১ টাকা। জেলার ৮ উপজেলায় ১০৯টি বাড়ি নির্মানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৭৯ হাজার ৮শ’ ৭৯ টাকা। উপজেলা ভিত্তিক বাড়ি নির্মান ও বরাদ্দের পরিমান হল চকরিয়া, পেকুয়া ও কুতুবদিয়ার জন্য ১২টি করে বাড়ির জন্য প্রতি উপজেলায় ৩১ লাখ ২ হাজার ৩৭২ টাকা।

মহেশখালীতে ১৭টি বাড়ির জন্য ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার ২৭ টাকা। কক্সবাজার সদরের ১১ টি বাড়ির জন্য২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪১ টাকা। এছাড়া রামুর , উখিয়া ও টেকনাফের জন্য ১৫টি করে বাড়ির জন্য ৩৮ লাখ ৭৭ হাজার ৯’ শ ৬৫ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি ২ শতাংশ পরিমান জমির মালিক, জমি পাওয়া সাপেক্ষে হিজড়া, বেদে, বাউল ,আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, গৃহহীন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, নদী ভ্ঙ্গন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে গৃহহীন, বিধবা,তালাকপ্রাপ্তা, প্রতিবন্ধী এবং পরিবারে উর্পাক্ষম লোক নেই এমন লোককে উক্ত বাড়ি দেওয়া হচ্ছে যা তালিকায় প্রতীয়মান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে অনেক অসহায় পরিবার মাথাগুজার ঠাঁই পাবে।