কঠিন সমীকরণে উখিয়ায় স্থগিত ইউপি নির্বাচন

হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া :

কক্সবাজারের উখিয়ার বহুল আলোচিত হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পুননির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলম ও ঘোড়া প্রতীকের ইমরুল কায়েস এর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫ নং ওয়ার্ডে ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ফলে নির্বাচন স্থগিত হয়।

৩০ নভেম্বর স্থগিত কেন্দ্রে পুননির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২৮ নভেম্বর রাতে প্রচারণা শেষ হয়। উভয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় এক পক্ষ অন্য পক্ষকে বাধা ও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এ নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই এলাকায় চরম উত্তেজনা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

সাধারণ ভোটাররা বলছেন, গতবার ভোট ডাকাতির সময় আমরা প্রতিরোধ গড়ে তোলেছি। পুনরায় ভোট ডাকাতির ঘটনা ঘটলে প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবে না কেউ। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর পাশাপাশি কঠোর অবস্থানে রয়েছেন সাধারণ সচেতন ভোটাররা।

হলদিয়া পালং এলাকার ভোটার জাফর আলম বলেন, নৌকা প্রতিকের প্রার্থী শাহ আলম ৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভোটে নির্বাচিত হননি। মন্ত্রী পরিসদের সাবেক সচিব শফিউল আলমের ছোট ভাই হিসেবে তিনি প্রভাব ও ক্ষমতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার তিনি ভোটে নির্বাচিত হতেন। কিন্তু চেয়ারম্যান ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত এনে বিতর্কিত কথা বলা এবং তার স্ত্রী প্রচারণার সময়ে ভোটারদের সাথে অশোভন আচরণের ফলে তিনি এখন চ্যালেঞ্জিং অবস্থায় পড়েছেন। সেইবার তিনি আমাদের ভোটাধিকার হরণ করেছেন। তাই এবার আর সেই সুযোগ তিনি পাবেন না। গতবার যেনতেনভাবে তিনি তার ফলাফল হাতিয়ে নিতে সক্ষম হন।

গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও হলদিয়া ৫ নং ওয়ার্ডে কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যালট বক্স ছিনতাই করে ভোট বানচালের অপচেষ্টা চালানো হয়। এবার স্থানীয় ভোটার ও উপজেলা প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার কারণে দুর্বৃত্তরা ভোট ডাকাতি করতে ব্যর্থ হয়।

৩০ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য স্থগিত হওয়া কেন্দ্রের নির্বাচনে আবারো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ফলাফল পাল্টে দেয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এমন যদি ঘটনা ঘটে তাহলে প্রশ্নবিদ্ধ হবেন প্রশাসন। তাই আম জনতার চাওয়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রশাসন নিরপেক্ষতার পরিচয় দেবেন। এই কেন্দ্রটি অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।

স্থানীয় হেলাল উদ্দিন বলেন, ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মেরে আমাদের ভোটাধিকার হরণ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হলে তার জবাব সাধারণ ভোটাররা এবার ভালভাবেই বুঝিয়ে দেবেন। আশা করা যায় অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি রয়েছে। ফলে জনগণ একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রত্যাশায় রয়েছেন।

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন, হামলা-মামলা-হুমকিতে আবারো উত্তপ্ত হলদিয়া পালং এর নির্বাচনী মাঠ। বহিরাগতদের আনাগোনা বৃদ্ধি। আতংকিত সাধারণ ভোটাররা। প্রচারণা শেষ হওয়ায় নেতারা ব্যস্ত মেরুকরণে। সচেতন মহলের প্রত্যাশা সংঘাতমুক্ত নির্বাচন। সাংবাদিকসহ প্রশাসন রয়েছেন গভীর পর্যবেক্ষণে।

হলদিয়া পাতাবাড়ির ভোটার লিয়াকত, শফিকুর ও সব্বির আহমদ বলেন, হলদিয়া ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ঘাটি। এখানে নৌকার ভোটার বেশি। বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ আলম এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন করেছেন। ভোটাররা তার প্রতিদান দেবেন। তিনি আবারও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।

এদিকে হলদিয়া পালং ৫ নং ওয়ার্ডের ভোটার এবং এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন, আগামী ৩০ নভেম্বর বহুল আলোচিত নলবনিয়া কেন্দ্রে ভোটাররা যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদান করতে পারেন। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের সার্বিক সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।