কর্মজীবনের স্মৃতিচারণ করে বিদায় নিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

চার বছর দায়িত্ব পালন শেষে কর্মজীবনের স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে বিদায় নিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিদায় নেন তিনি।

এ সময় স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমি আজ আমার কেবিনেট সেক্রেটারি হিসেবে ঠিক চার বছর পূর্ণ করলাম। গত ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর শুরু করেছিলাম, আজ ২৮ অক্টোবরে চার বছর হলো। সবার দোয়ায় আমি আজই পরবর্তী দায়িত্ব পালনের জন্য ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছি। কাজ করতে গিয়ে আপনারা প্রাইভেট সেক্টরে কাজ করেন আর আমরা সরকারি সেক্টরে কাজ করি, এটা কখনো মনে হয়নি। সবাই মিলে সব সময়ই কাজ করেছি, সবার সহযোগিতা পেয়েছি। এরপরও যদি আমাদের তরফ থেকে কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে থাকে, কোনো বিষয়ের ব্যত্যয় ঘটে থাকে, তাহলে আপনারা নিজ গুণে ক্ষমা করবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন, আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

আমার দায়িত্ব পালনকালে অনেকগুলো অর্জন আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমাদের এসব অর্জনের জন্য স্যাটিসফাইট। আমাদের একটা বড় অর্জন হলো আমরা দিনের কাজ দিনে শেষ করেছি। যেমন ধরেন আজ কেবিনেটের মিটিং, আজই প্রসেডিং শেষ করে দেব। প্রধানমন্ত্রীর সইয়ের পর সব কিছু আজই চূড়ান্ত হবে। আর ডকুমেন্ট যদি বেশি বড় হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা রাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিই। শুধুমাত্র কেবিনেট মিটিং নয়, পার্চেস কমিটিসহ সব কমিটি এবং অন্যান্য মন্ত্রিসভা কমিটির ক্ষেত্রেও এ নিয়ম অনুসরণ করেছি। আমাদের নিজস্ব মিটিংগুলোর ক্ষেত্রে সমন্বয় সভা বা বিভাগীয় কমিশনারদের সভা হয়তো আমরা সকাল ১০টায় করলাম, ১২টা-১টার মধ্যেই রেজুলেশন সই করে শেষ করি, যোগ করেন বিদায়ী এ সচিব।

তিনি বলেন, এটা আমরা ভালো একটা চর্চা অব্যাহত রেখেছি। সচিবদের সঙ্গে আমাদের যে চুক্তি ছিল, সেটা আমরা বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে (এপিএ) সংযুক্ত করেছি এবং এতে করে আমরা একটা ভালো ফলাফল পেয়েছি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে আমার যেহেতু এটা শেষ সেশন ছিল, এজন্য মন্ত্রিসভা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

মন্ত্রিসভার আরেক এজেন্ডা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাউথ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী যারা বাংলাদেশের ডিপ্লোম্যাটিক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারী, তারা ভিসা ওয়েভার পাবেন সাউথ আফ্রিকাতে। অপরদিকে তাদের দেশের ডিপ্লোম্যাটিক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীরাও বাংলাদেশে ভিসা ওয়েভার পাবেন।

উল্লেখ্য, ৩৬ বছরের কর্মজীবন শেষে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) অবসরে চলে যাচ্ছেন বাংলাদেশের শীর্ষ এ আমলা। তাকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পদমর্যাদায় আগামী ১ নভেম্বর থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের সদর দফতরে বিকল্প নির্বাহী পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সেতু বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে পরবর্তী মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।