কলেজছাত্রী ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় পুলিশ সদস্যের ফাঁসি

ডেস্ক রিপোর্ট – কিশোরগঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই কলেজছাত্রীকে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজনকে ফাঁসি এবং অপর ছয়জনকে চার বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার হাট ব্যারেঙ্গা গ্রামের আ. ছোবানের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনের কনস্টেবল মনিরুজ্জামান ওরফে হলুদ ওরফে সুজন (৩৬) এবং ঝালকাঠির নলছিটি আমিরাবাদ কাওখিরা গ্রামের ফজলে আলী হাওলাদারের ছেলে শামীম হালদার ওরফে জহির (৩৮)। আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে তারা।

রোববার বিকেলে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক কিরন শংকর হালদার এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনকে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

চার বছর করে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- দিলবর হোসেন (২২), মো. মোস্তফা মীর ওরফে রানা (৩৫), আবুল হোসেন (৩৮), বাবুল মিয়া (৪৫), জয়নাল আবেদীন (২৯) ও কবির উদ্দিন (২৫)।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, শহরের গাইটাল এলাকার আবু বাক্কারের মেয়ে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তার সুমির সঙ্গে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে কর্মরত কনস্টেবল মনিরুজ্জামান হলুদের।

তার মাধ্যমে জহিরের প্রেমের ফাঁদে পড়ে সুমির বান্ধবী একই কলেজের শিক্ষার্থী শহরের তারপাশা গ্রামের নূরুন্নবীর মেয়ে আফরোজা আক্তার উর্মি।

২০০৮ সালের ১৬ জুলাই জমি লিখে দেয়া ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সুমি ও উর্মিকে কিশোরগঞ্জ থেকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যায় কনস্টেবল মনিরুজ্জামান ও জহির।
ওই দিন বিকেলে ঢাকার কারওয়ান বাজারে অবস্থিত ‘ওয়েস্টার্ন গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল’ আবাসিক হোটেলের দুটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে কলেজছাত্রী সুমি ও উর্মিকে হত্যা করে মনিরুজ্জামান ও জহির।

হত্যার পর হোটেল কক্ষে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় মনিরুজ্জামান ও জহির। পরে হোটেলের ছয় কর্মচারীর সবজির টুকরিতে করে তাদের মরদেহ কাওরান বাজার রেললাইনের কালভার্টের নিচে এবং তেজগাঁও রেলস্টেশনের বাম পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় আফরোজা আক্তার সুমির বাবা আবু বাক্কার বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতদের আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন।

মোবাইলের সূত্র ধরে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মো. আমজাদ হোসেন তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আটজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

রায়ে নিহতদের স্বজন ও বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করে অবিলম্বে পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।