কোন পথে যাচ্ছি আমরা ফেসবুকের দুনিয়ায়!

 


সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরের সামনে কয়েকজন শিশু ১০/১২ বছরের হবে হাতে স্মার্ট ফোন নিয়ে গেমস খেলছে তখন মুসল ধারে বৃষ্টি হচ্ছিল শুধু ওয়াইফাই কানেকশন পেতে আমার বাসার সামনে তাদের প্রতিনিয়ত ভীড় হয়।

তখন চিন্তা করলাম আমরা এ বয়সে কতকিছু খেলেছি, ফুটবল, ক্রিকেট, হা-ডুডু, লুকোচুরি, মারবেল, ডাং, আরো কতো কি।

১২ বছর বয়সে আমি সাঁতার, সাইকেল, গাছে উঠা, আরো কতরকম কাজ পারতাম, মাঝে মাঝে নদীতে মাছ ধরতে যেতাম, আমি ১৪ বছর বয়স থেকে বাজার করতে জানতাম, কিন্তু বর্তমানের ছেলেরা ২০/২২ বছর হওয়ার পরেও বাজার করতে ভয় পাই, বা অনেকে জানেনা কিভাবে বাজার করতে হয়। সেদিন এক ১১ বছরের এক ছেলেকে বললাম, বল খেলতে পারো? বলছে পারিনা, দৌড়াতে পারো? বললো তেমন পারিনা, ঘরে বসে শুধু গেমস খেলতে পারি, অর্থাৎ তার শরীর এখন থেকে অচল হয়ে যাচ্ছে।

তখনকার দিন আমরা মামার বাড়ি, নানার বাড়ি, খালা/মাসি, ফুফু/পিসির বাড়ি বছরে অন্তত একবার বেড়াতে যেতাম, কিন্তু মোবাইল আসার পর থেকে তেমন একটা যায়না, স্মার্ট ফোন আসার পর একেবারে বন্ধ হয়ে গেছ, যে আত্নীয় স্বজন নামের কেউ আছে। শুধু মাঝে মাঝে একটু অডিও বা ভিডিও কল তাতেই যথেষ্ট হয়েযায়। দেখা যায় সব আত্নীয় স্বজন ফেসবুকে যুক্ত অাছেন তাই মন চাইলে কোন দিন তাদের ছবিতে একটা লাইক বা লাভ রিয়েকট বা একটা তেল মার্ক কমেন্ট করে দায়িত্ব সেরে পেলি। যার ফলে র্সম্পকের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে গেছে অনেক বেশি।

মানুষ দীর্ঘক্ষন ধরে ফেসবুকে সময় কাটায় রাত দিন প্রায় সমান অনেকের কাছে এখন। যার প্রেক্ষিতে দেখাযাচ্ছে নানারকম শারীরিক ও সামাজিক সমস্যা, যেমন অনিদ্রা, ব্যাক পেইন, হার্ড ডিজিজ, মানসিক সমস্যা, বন্ধ্যাত্ব, ডায়াবেটিস, আরো নানা ধরনের রোগব্যাধি।
সামাজিক সমস্যা – পারিবারিক ঝগড়া, পরকীয়া, ডিভোর্স, বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, ব্ল্যাকমেইল, নারীপাচার সহ নানা অপরাধ।

আগে মানুষ অবসর সময়ে ঘরের টুকিটাকি কাজ করতো, শারীরিক পরিশ্রম করতো এখন দিনদিন অলস হয়ে যাচ্ছে শুধু স্মাট ফোনের পেছনে সময় দিতে গিয়ে। যার ফলে অল্পবয়সে বাধ্যর্ক চলে অাসে শরীরে।

কিছুদিন ধরে ফেসবুকে লেখালেখি হছে তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ হবে নাকি সুপেরীয় পানির জন্য, কিন্তু আমি একজন পাবলিক হেলথ এর ছাত্র হিসেবে মনে করি তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ হবে সুস্থ শরীর এর সংকট নিয়ে। যে শিশুটা ১০/১২ বছর ফুটবলে লাতি মারতে পারেনা, দৌড়দিলে পড়ে যায় সে প্রজন্মটা কি ভাবে সুস্থ শরীর নিয়ে পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে, এবং সে কিভাবে তার পরিবার,সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তাই ফেসবুক ব্যাবহরে অারো বেশি র্সতকতা অবলম্বন করতে হবে, পরির্তন অানতে সু সাস্হ ব্যাবহার এবং তা শুরু করতে হবে ব্যাক্তি পযার্য় থেকে, এবং পরিবার ও সামাজিক র্পযায়ে।

সুস্থ শরীর ব্যাতিত কোন জাতির উন্নতি সম্ভব নয়। তাই আপনার ও অামার শিশুর দায়িত্ব আপনাকে, ও আমাকে নিতে হবে, এবং নিজের মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হবে, তাহলে সুস্থ শরীর এবং মানসিক ভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব হবে।

দ্বিতীয় র্পযায়ে লেখাটি হবে কিভাবে ফেসবুক ব্যাবহার কমানো যায় এবং মানসিক বৃদ্ধি ঘটানো ও শিশুর খেয়াল রাখা।

মিঠুন কুমার দত্ত
Masters of public health ( Student)
University of creative technology Chittagong.