রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আটক ৯

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল •

পার্শ্ববর্তীদেশ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে উখিয়া-টেকনাফে অবস্থান নেওয়া অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা বেড়েই চলছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত কয়েক দিনের ব্যবধানে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন অপরাধী নিহত হয়েছে।

এই সমস্ত অপরাধীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে আস্তানা তৈরী করে অত্র এলাকায় মাদক পাচারসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত করে যাচ্ছে।

এদিকে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলের সদস্যদের ধরতে কক্সবাজারে দায়িত্বরত র‍্যাবব-১৫ সদস্যরা চালিয়ে যাচ্ছে কঠোর অভিযান।

তারই ধারাবাহিকতায়, ৬ অক্টোবর ভোরে টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত হোয়াইক্যং চাকমার কুল গহীন পাহাড়ী এলাকায় অবস্থান নেওয়া দেশীয় তৈরী অস্ত্র,গুলিসহ ৯ জন রোহিঙ্গা ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে র‍্যাব।

আটক ডাকাতরা হচ্ছে, রশিদ আহাম্মেদ(৩২), ছলিম উল্লাহ(৫৫), শফিক আলম(২০),আব্দুল হামিদ(২০), মোহাম্মদ সাবের(৩২), মোহাম্মদ সেলিম(৫০), মোঃ ইসমাইল(২৫), হারুনুর রশিদ (২৮), ফয়েজ(২২)।

সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের মাধ্যমে র‍্যাবব জানতে টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউনিয়ন চাকমারকুল এলাকায় একদল ডাকাত অবস্থান নিয়েছে।

সেই তথ্য অনুযায়ী র‍্যাবের চৌকষ অভিযানিক দল উক্ত এলাকায় সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্রধারী ৯ ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরী ৪টি অস্ত্র, ২০ রাউন্ড গুলি, কিরিচ,লোহার রড উদ্ধার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।

অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে র‌্যাব-১৫ কর্মরত উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান জানান, গত কয়েকদিন ধরে উখিয়া কুতুপালং অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মধ্যে মাদক পাচার নিয়ন্ত্রন করাসহ নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে ডাকাতি এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত দুই বাহিনীর মধ্য সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘটিত এই ঘটনায় তিন রোহিঙ্গা মারা যায়।

এরপর থেকে ঘটনার সাথে জড়িত এবং রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ধরতে র‍্যাব সদস্যরা শুরু করে দফায় দফায় সাঁড়াশী অভিযান।

অভিযানের উপস্থিতি টের পেয়ে রোহিঙ্গা ডাকাতরা কুতুপালং ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে ৬ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সকালে টেকনাফ হোয়াইক্যং চাকমারকুল গহীন পাহাড়ি এলাকা থেকে দেশীয় তৈরী অস্ত্রসহ ৯ ডাকাতকে আটক করা হয়।

তিনি আরো বলেন, গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা ডাকাত দলের সদস্যদের নির্মুল করার জন্য র‍্যাবের চলমান এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এদিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের অন্তর্গত নয়াপাড়া-শালবাগান-লেদা ও জাদিমুড়া এলাকায় গড়ে উঠা রোহিঙ্গা শিবির গুলোতে গড়ে উঠেছে আরো বেশ কয়েকটি উঠতি বয়সের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী। এদের মধ্যে সালমান শাহ ও জকির বাহিনী অন্যতম।

এ সমস্ত সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত ডাকাতি, অপহরণ, মানুষ হত্যাসহ নানামুখি অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত করার কারনে ক্যাম্পের ভিতরে এবং বাহিরে থাকা সাধারন মানুষ গুলো দিন কাটাচ্ছে ভয়ে আর আতংকে।

এরা কথায় কথায় দেশীয় তৈরী বিভিন্ন প্রকার অস্ত্র নিয়ে জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। তাদেরকে আইনের আওয়তাই নিয়ে আসতে পারলে অত্র এলাকায় মাদক পাচার নিয়ন্ত্রনসহ নানামুখি সংঘটিত অপরাধ কর্মকান্ড অনেকটা কমে আসবে বলে দাবী করছেন স্থানীয়রা।