চকরিয়ায় হাতি মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে কৃষকের মৃত্যু!

মো. কামাল উদ্দিন, চকরিয়া:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় হাতি মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নজির আহমেদ (৪৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

তিনি হারবাং ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মোহছেন সিকদার পাড়া এলাকার নাজির হোসেনের ছেলে।

নিহত নজির আহমেদের পরিবারের বরাত দিয়ে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো সাতখানিয়া ঘোনা নামক এলাকায় তার রোপনকৃত ধানক্ষেতে পানি দিতে গেলে গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে হাতি মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে এই ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত ইনচার্জকে ঘটনার বিষয়ে অবগত করা হলে দুপুর ১২টার দিকে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই মহসিন চৌধুরী পিপিএম এর নেতৃত্ব এএসআই সোলায়মান খাঁনসহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত নজির আহমেদের লাশ উদ্ধার করেন।

ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হারবাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের আওতাধীন সাতখানিয়া ঘোনা নামক এলাকায় ধানক্ষেতে রাতে বন্য হাতির হানা দেওয়ার সম্ভাবনার অজুহাতে ধানক্ষেতের চারপাশে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক লাইন সংযুক্ত করে হাতি মারার ফাঁদ ফাঁতেন কয়েকজন কৃষক।

কিন্তু বিধিবাম, হাতি মারার বৈদ্যুতিক এ ফাঁদে হাতির বদলে জড়িয়ে পড়েন নজির আহমেদ নামের এ কৃষক। হাতি মারার ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

ধানক্ষেতে অবৈধভাবে হাতি মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদ ফাঁতা ব্যক্তিরা হলেন- একই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নাপিতচিতা এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে আব্দুল ছাত্তার, বেলাল আহমেদের ছেলে জমির উদ্দিন, ৬ নং ওয়ার্ডের মসজিদ মোরা এলাকার নেজাম উদ্দিন প্রকাশ মনুর ছেলে মোঃ সাজ্জাদ, আক্তার আহমেদের ছেলে মিজানুর রহমান প্রকাশ ছোটন।

এ ব্যাপারে জানতে হারবাং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বনবিটের বিট কর্মকর্তা মোঃ শাহাজানের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের করা হলে তিনি সমূহ ঘটনাস্থল তাদের আওতাধীন জায়গা নয় দাবি করে বলেন, এটি মূলত হারবাং বনবিট ও পহরচাঁদা বনবিটের আওতাধীন সীমান্ত এলাকা। সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সমূহ জায়গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের নয় বলে নিশ্চিত হয়েছি।

এদিকে এ ঘটনার বিষয়ে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত এসআই মহসিন চৌধুরী পিপিএম বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমিসহ এএসআই সোলায়মান খান ও সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলে গিয়েই নজির আহমদ প্রকাশ বার্মাইয়া নজির নামের এক কৃষকের ঝলসানো লাশ উদ্ধার করি। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনপূর্বক লাশ থানায় নিয়ে আসা হয়।

নিহত নজির আহমেদের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।