চকরিয়ায় জোয়ার-ভাটার লবনাক্ত খালের বালু যাচ্ছে নির্মাণ কাজে!

চকরিয়া সংবাদদাতা •


চকরিয়ায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জোয়ারভাটা খালের লবনাক্ত বালু যাচ্ছে বিভিন্ন নির্মাণ কাজে। অবৈধ সেলু মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে রয়েছে সড়ক, কবরস্থান, মসজিদ-মাদ্রাসা ও বসতঘর। এনিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয় জনগণ। কিন্তু জড়িতরা এসব তোয়াক্কা করছে না কিছুতেই।

চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট পুলিশ ফাঁড়ির পূর্ব পাশে (৭নং ওয়ার্ড) মগছড়াজুম এলাকায় চলে এ তান্ডবলীলা। লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, মগছড়াজুম এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ডুলাহারছড়া লবনাক্ত পানির জোয়ারভাটা খাল। সেখান থেকে ওয়ার্ড আওয়ামিলীগ নেতা স্থানীয় মোহাম্মদ মিয়ার পুত্র গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে এই লবনাক্ত বালু বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হচ্ছে। এসব বালু বিভিন্ন ঢালাই, বহুতল ভবন ও নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। অপরদিকে নির্মাণকাজে এসব লবনাক্ত বালু ব্যবহার চরম মারাত্মক আর হুমকিস্বরূপ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ওয়ার্ড আওয়ামিলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন জানান, ডুলাহারছড়া নামের জোয়ার ভাটার এ খাল থেকে বালু উত্তোলনে তিনি একা জড়িত নন। তার সাথে শেয়ারে জড়িত আছে সাবেক ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা স্থানীয় আলা উদ্দিনের পুত্র রিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি ও একই এলাকার আবুল সালাম।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ইজারা নেয়া খাল থেকে বালু উত্তোলন করলে সমস্যা কোথায়। সব জায়গায় সেলু মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে তাই ওখানেও তোলা হচ্ছে। লবনাক্ত খাল হলে এটি ইজারা দেয়া হয়েছে কেন! এ খালটি আমার নামে ইজারা নেয়া হয়েছে। অন্যান্য খালের চেয়ে এ খাল থেকে টাকা আসছেও কম।

ডুলাহাজারা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী জামাল হোছাইন বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের কেউ জোয়ার ভাটার লবনাক্ত খাল থেকে বালু বিক্রি করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে ওই বিষয়টি আমি আগে খবর পেয়ে তাকে নিষেধ করেছিলাম। সে আর কখনো লবনাক্ত খালের বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করবেন না বলে জানিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে আবারও কথা বলে দেখব অন্যতায় দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।

এছাড়া ডুলাহারছড়া খাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবহনের ফলে সড়ক ভেঙ্গে জন চলাচল অনুপযুক্ত হয়ে পড়ছে। বিলীনের আশংকা জনবসতি, কবরস্থান ও মসজিদ-মাদরাসা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় জনসাধারণ চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এবং কক্সবাজার উত্তর বিভাগের ডিএফও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বালুদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় এসব আইনকানুন তোয়াক্ষা না করে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ছড়াখাল থেকে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছে।

অভিযোগ কেন, কেউ কোনভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। যতবড় শক্তিধর ব্যক্তি হোকনা কেন অতিসত্বর অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান।