চলুন নির্ভেজাল পরিবেশ অভিমুখে

রূপম চক্রবর্ত্তী ◑

আত্ম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা আমাদের বিবেক বিসর্জন দিয়ে থাকি। নিজেকে প্রতিষ্ঠা জন্য সদা ব্যস্ত থাকতে থাকতে এক সময় আমাদের জীবন শেষ হয়ে যায় ।

আমাদের মধ্যে অনেকে চাই যেন নিজের নামে অনেকে জয়ধ্বনি করুক। চারদিকে নিজের মতবাদ প্রচার হোক। এই আমিত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমরা কারো সুনাম করছি অথবা কারো দুর্নাম করছি।

আমার মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ভিন্নমতের মানুষকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করার জন্য সবসময় চেষ্টা করছি। এই আমিত্ব শব্দটা কেন জানিনা আমার কাছে দিনদিন খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে। কাউকে কোনো বিষয়ে ছাড় দিতে আমি ইচ্ছুক নই। আমি চাইনা আমার জায়গা কেউ দখল করুক। অথচ আমি আরেকজনের জায়গা দখল করতে চাই। আরেকজনের সুনাম নষ্ট করতে চাই।
আমার এই অহংবোধ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত অনেক টাকা খরচ করছি।

অথচ আমার বাসার পাশের অথবা বাড়ির পাশের যে লোকটি না খেয়ে আছে তার দিকে আমার খেয়াল নেই। আমার অসুস্থ আত্মীয়টিকে কখনো সেবা দিতে পারিনি। দিনের পর দিন নিজের নাম যশ প্রচারের জন্য ছুটে চলেছি অথচ আমার ঘরের মা-বাবার,স্ত্রী,অথবা নিকট আত্মীয় পরিজনের খবর রাখারও আমার সুযোগ হয়ে উঠেনি।

আমি ভুলে যাই আগে আমি কি ছিলাম। আমি ভুলে যাই আমার অতীত স্মৃতি। অনেকে ভাবি পূর্বের ইতিহাসকে শ্রদ্ধা জানালে আমার আত্মপ্রতিষ্ঠা হবেনা। নদীর তীর দিয়ে হাটঁতে হাটঁতে চিন্তা করছি বয়স তো আর থেমে থাকবেনা। সুসময়ের বন্ধুরা একসময় আমাকে রেখে চলে যাবে। আমি এতদিন যা করেছি সবতো মিথ্যা আর টাকা দিয়ে কেনা। আমি যখন একা হয়ে যাব তখন হয়তো দেখা যাবে কাছের বন্ধুরা আমার নামে জয়ধ্বনি করার পরিবর্তে সমালোচনায় মেতে উঠবে। আমি যা অর্জন করেছি তার কোনো কিছুর মাঝে প্রিয়জনদের ভালবাসা ছিলনা। আজকে প্রভুর কাছে প্রার্থনা জানাচ্ছি আমার অহংকার যেন আস্তে আস্তে সামনে প্রবাহিত স্রোতধারায় ধুয়েমুছে পরিষ্কার হয়ে পরিশুদ্ধ মানুষ হয়ে উঠতে পারি।

পরিশুদ্ধ মানুষ হয়ে পরিশুদ্ধ পরিবার, সমাজ গঠনের মাধ্যমে আমরা আগামী প্রজন্মের ছেলেমেয়েকে নির্ভেজাল একটি পরিবেশ উপহার দিতে পারি।

লেখক : রূপম চক্রবর্ত্তী
পূর্বনলুয়া,সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম