মাদক কারবারিরা নেতা হতে মরিয়া

টেকনাফের কথিত বিএনপি নেতা ইয়াবাসহ চট্টগ্রামে আটক

নিজস্ব প্রতিনিধি,টেকনাফ •

টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের কথিত এক বিএনপি নেতা চট্টগ্রামের মীরসরাই থানা পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ আটক।

সূত্রে জানা যায়, হ্নীলা ইউনিয়ন ১নং ওয়ার্ড মরিচ্যাঘোনার ‘সুড়ঙ্গ’ বাড়ির মালিক নামে আলোচিত ইয়াবা ডন ও বিএনপি নেতা ফয়সাল কমলা লেবুর ভেতরে করে অভিনব কায়দায় ইয়াবার স্যাম্পল দেখাতে ঢাকা যাওয়ার পথে ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছে।

গত ২৬ নভেম্বর(বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার দিকে মীরসরাই থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) দিনেশ চন্দ্র দাস গুপ্ত গোপন সংবাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল উক্ত উপজেলার ফকির হাট এলাকা থেকে তাকে আটক করে এবং তার কাছে থাকা বেশ কয়েকটি কমলা লেবুর ভিতর থেকে ৩৮০পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে।
সে হ্নীলা মরিচ্যাঘোনার মৃত ফজল করিমের পুত্র।

জিজ্ঞাসাবাদে ফয়সাল জানায়, এই মাদকের চালান স্যাম্পল হিসেবে দেখানো জন্য তার পার্টনারদের নিকট নিয়ে যাচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়েরের করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানায়,মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান (পিপিএম)।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১০মার্চ হ্নীলা কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সহযোগীতায় টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ ইয়াবা ডন ফয়সালের বাড়িতে আইন-শৃংখলা বাহিনীর অভিযানে গেলে এই ফয়সাল তার বাড়ির ভিতর থেকে তৈরী করা সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এছাড়া চলতি বছরের গত ৭ অক্টোবরে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনাকারী একটি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর টাকার বিনিময়ে পার পেয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠে।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, কতিপয় এই মাদক কারবারী টেকনাফ উপজেলার অসাধু বিএনপি নেতাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির নেতা হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।

সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টেকনাফের অর্থলোভী বিএনপি নেতারা এই মাদক কারবারীকে নেতা বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। এই ইয়াবা ডন ও আলোচিত সুড়ঙ্গ বাড়ির চিহ্নিত মাদক কারবারীরা বিশেষ প্রভাবশালী মহলের ইন্ধন ও দূর্নীতিবাজ আইন-শৃংখলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের সাথে বিবিধ লেন-দেনের মাধ্যমে আতাঁত করে মরিচ্যাঘোনা এলাকাকে প্রকাশ্যে ইয়াবার চালান ক্রয়-বিক্রয়ের আস্তানায় পরিণত করে। মাদক বিক্রয়ে বাঁধা দেওয়ায় ফয়সালের ভাই হাসান স্থানীয় এক ঈমামকে গুলি করে মারার জন্য ধাওয়া করে। প্রাণ ভয়ে উক্ত ঈমাম চাকরী ছেড়ে অন্যত্র পালাতে বাধ্য হয়। এই ঘটনা ফাঁস হলে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশের হাত থেকে বাঁচতে হাসান আতœগোপনে চলে যায়। এখন সে এলাকায় আবারো ফিরে এসেছে।

দুই ভাই মিলে আবারো এই অপতৎপরতা শুরু করে। অবশেষে পার্টনারদের স্যাম্পল দেখাতে গিয়েই পুলিশের হাতে ইয়াবা ডন ফয়সাল আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় লোকজন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে এবং অনেককে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারে জড়িত কথিত এই বিএনপি নেতা আটকের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, তাকে হ্নীলা ১নং ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি করার জন্য লিখিত একটি সুপারিশ উপজেলা কমিটি বরাবরে জমা দেওয়া হয়েছিল। অনুসন্ধানে আমরা জানতে পারি সে মাদক ব্যবসায় জড়িত তাই উক্ত ওয়ার্ডের ঐ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

তিনি আরো বলেন মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত নেতাকর্মিদের কমিটি থেকে বাদ দিয়ে উপজেলা বিএনপিকে আরো শক্তিশালী করা হবে। ###