তীব্র গরমে হাঁপিয়ে উঠছেন কক্সবাজারের শ্রমজীবী মানুষ

সৈয়দুল কাদের •

তীব্র গরমে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে শ্রমজীবী মানুষের দূর্ভোগ চরম পর্যায়ে এসেছে। সামান্য কাজ করতেই হাফিয়ে উঠছেন এসব লোকজন। তাপমাত্রা না বাড়লেও বেড়েই চলেছে গরমের তীব্রতা। গরমের কারণে পর্যটকও কমে আসছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবদুল হামিদ মিয়া জানিয়েছেন গরমের ধারাবাহিকতা আরো কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। টানা বৃষ্টি হওয়ার তেমন সম্ভবনা নেই। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হতে পারে। গতকাল ১৯ মে কক্সবাজারে সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আদ্রতা কমে যাওয়ায় বেশী গরম অনুভুত হচ্ছে। এ সময় বাতাসে আদ্রতা থাকার কথা ৪০-৫০ শতাংশ। এখন আদ্রতা প্রায় ৭৫-৮০ শতাংশ। যার ফলে গরমের তীব্রতা বেশী অনুভুত হচ্ছে।

এদিকে তীব্র গরমে হাফিয়ে উঠছেন খেটে খাওয়া লোকজন। অন্যদিকে গরমে বেশ কিছু শারিরীক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অসংখ্য রোগী। তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন জেলার সর্বস্থরের সাধারণ মানুষ। ঈদের ছুটিতে ও গরমের কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যা এবার আশানুরূপ হয়নি।
সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, আগে লকডাউনের কারণে এমনিতেই কয়েক মাস ধরে সবাই ঘর বন্দি ছিল, আর তীব্র গরমে বের হওয়া যাচ্ছে না।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরাও অনেকটা অস্বস্থিবোধ করছেন। গাড়ীর মাঠ এলাকার সমাজ কমিটির নেতা গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, অনেক দিন ঘরে থাকতে থাকতে পরিবারের সবাই হাফিয়ে উঠেছিল। তাই আশা করেছিলাম এবার একটু স্বস্থি পাব। কিন্তু তীব্র গরমের কারণে সেই আশাও নিস্ফল হয়ে যাবে মনে হয়। এতে শিশুরা বেশ অস্থির হয়ে গেছে।
রিক্সা চালক সাহেব মিয়া জানিয়েছেন দুই ঘন্টার অধিক গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। দুই ঘন্টা গাড়ি চালালে দুর্বল হয়ে পড়ছি। কিন্তু গাড়ি মালিক দিনের ভাড়া ২০০ টাকাই নিচ্ছেন। রাস্তায় তেমন লোকজনও নেই। তাই পরিবার নিয়ে আর্থিক সমস্যায় আছি। এছাড়া অতিরিক্ত গাড়ি চালালে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি।
শহরের পুরাতন শহীদ মিনার এলাকায় কথা হয় নির্মাণ শ্রমিক মো. শাহজাহানের সাথে। তিনি বলেন পেটের দায়ে কাজের সন্ধানে এলেও আমাদের কাজ দেওয়ার লোক তেমন নেই। তীব্র গরমে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ করতে সমস্যা হয়। তাই এখন কেউ কাজে নিতে চায় না।
কক্সবাজার সিটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আবুল হাসেম জানিয়েছেন শহরের চাইতে গ্রামে গরমের তীব্রতা  বেশী। আগে গ্রামে বিভিন্ন গাছের ছায়া থাকতো বাড়িঘরে রাতের বেলায় বেশ ভাল ভাবে ঘুমানো যেত এখন ঘনবসতির কারণে সেই পরিবেশও আর নেই। তীব্র গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে জ্বর সর্দি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেকে।
এ ব্যাপারে ডাক্তার সাইফুল ইসলাম বলেন, মূলত তীব্র গরম পড়ার কারণে রোগি বাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অনেক শিশু গরমে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে বমি, পায়খানা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তিনি গরমের সময় সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য আহবান জানান।