দুই লেনে উন্নীত হচ্ছে মেরিন ড্রাইভ

মুহিবুল্লাহ মুহিব • বার্তা২৪

পর্যটকদের ভ্রমণ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগতদের চলাচলের সুবিধার্থে শিগগিরই কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক দুই লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি এ সড়কটি দুই লেন করতে একটি প্রকল্প পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বর্তমান মেরিন ড্রাইভটি ১৮ ফুট। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেসব গাড়ি যাতায়াত করে, সেগুলো এ সড়কটিই ব্যবহার করছে। পাশাপাশি কোনো রাষ্ট্র প্রধান এলেও এ সড়ক ব্যবহার করা হয়। চাপা রাস্তাটিতে অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করে। ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এজন্য ব্যস্ত এ সড়কটি ১৮ ফুট থেকে ৩২ ফুটে উন্নীত করতে চায় সরকার। এরই মধ্যে একটি প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনার কাজ চলছে। যা শিগগিরই সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শুরু হবে বলে জানা গেছে।

কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ‘এখন রাস্তার প্রস্থ কম। এজন্য অনেক অসুবিধায় পড়ছেন পর্যটকরা। সড়কটি দুই লেন হলে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবেন। তাছাড়া দুই পাশে যদি একটু বিনোদনমূলক প্রতিষ্ঠান করা যায়, তাহলে আরও বেশি মেরিন ড্রাইভমুখী হবেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা।’

মেরিন ড্রাইভ সড়কে চলাচলরত কার, মাইক্রো ও নোয়াহ মালিক সমিতির নেতা মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, ‘রাস্তা ছোট হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তা যদি বড় হয়, তাহলে এসব দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।’ ফাঁকা সড়ক থাকায় অনেকে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। তাদের দমনে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।

কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা জানান, যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে মেরিন ড্রাইভটি প্রশস্ত করতে চায় সরকার। রাস্তাটি দুই লেন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এরপর এটি প্রকল্প হিসেবে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যেহেতু এ সড়কটি নিয়ে সরকার খুবই আগ্রহী, তাই আশা করা যায়,শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজারে বিভিন্ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ সড়ক না থাকলে, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা কঠিন হতো। এটি ছিল বলে এতো বিদেশি অতিথি সহজে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতায়াত করতে পারছেন। তাই আগামী দিনের কথা চিন্তা করে সরকার এ সড়ক ৩২ ফুটে উন্নীত করতে চায়। এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।’



উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৬ মে সড়কটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমুদ্র সৈকতের ধার ঘেঁষে ৮০ কিলোমিটার সড়কটির ইনানীতে উদ্বোধন করেন তিনি। পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় এলাকাটিতে দ্রুত সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে ১৯৯৯ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন এটি নির্মাণ করে। মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় হয়েছে ৪৫৬ কোটি টাকা। তিনটি ধাপে এটি বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, পরের ধাপে শিলখালী থেকে টেকনাফ সদর পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার ও শেষ ধাপে শিলখালী থেকে টেকনাফের সাবারাং পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক তৈরি করা হয়।