ধর্ষণ, রাজনীতি ও পারিবারিক শিক্ষা

গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুক এবং মিডিয়ার বিশেষ খবর নারী ধর্ষণ। আমরা অনেকে এর বিরুদ্ধে লিখছি। এই সভ্য সমাজে অসভ্য আচরণ কারো কাম্য নয়। পুরুষ মহিলা সবার অধিকার আছে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার। প্রতি প্রত্যকের উচিত সুন্দরভাবে জীবন ধারন করা।

নিজে যেমন ভালোভাবে থাকব ঠিক তেমনি আমার প্রতিবেশী যেন ভালো থাকতে পারে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। একটি পরিবার হচ্ছে একটি আদর্শ শিক্ষা নিকেতন যেখানে ছেলেমেয়েরা ছোটবেলা থেকে অনেক কিছু শিখে। উন্মুক্ত ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন সাইটে ঢুকে ভালো দিকের সাথে খারাপ দিক ও গ্রহণ করতে পারে। কয়েকটি বিষয় আমাকে খুব ভাবিয়ে তুলছে। অনেক ছাত্রছাত্রীরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে।

র‍্যাগিং এর নাম দিয়ে জুনিয়র ছাত্রছাত্রীদের নির্যাতন করছে। ভিন্নমতের ছাত্রছাত্রীদের উপর প্রভাবশালী ছাত্রছাত্রীদের নির্যাতন চোখে পড়ার মতো।  সম্প্রতি সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ঘটনা আমাদের চিন্তার মাত্রাটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বামীর সাথে যাওয়া সত্বেও মেয়েটি নিরাপদ ছিলনা। তাকে ধর্ষিতা হতে হয়েছে কিছু ছাত্রের হাতে। অনেক ধর্ষক রাজনৈতিক বিভিন্ন পদে থাকতে পারে। তারা রাজনীতি করে নিজেকে বাঁচানোর জন্য। তারা রাজনীতি করে চাঁদাবাজি করার জন্য।

র‍্যাগিং অথবা ধর্ষণ করার পর অপরাধীকে রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা উচিত নয়। ঠিক একই সময় নয়জন পুরুষ দ্বারা একজন পাহাড়ি মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা শান্তি প্রিয় মানুষের মনে আতংকের একটা প্রভাব পড়েছে। যারা ছাত্র রাজনীতি করছেন তারা সব সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন যেন কোনো কুচক্রী আপনাদের ভিতরে প্রবেশ করে সুনাম নষ্ট না করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে যারা ছাত্র রাজনীতি করেন তাদের মনে রাখতে হবে এই দেশ মাতৃকার জন্য অসংখ্য ছাত্রছাত্রী প্রাণ দিয়েছেন। দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীরা বার বার এগিয়ে এসেছেন।

আমি চাইনা ছাত্রদের উপর ধর্ষণের কালিমা লাগুক। যারা কলেজ ভার্সিটিতে পড়ছেন তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে আপনারা যেকোনো ধর্ষণ অথবা অন্যায় কাজকে ঘৃণা করবেন। ধর্ষকের শাস্তির জন্য যেমন আইনের কঠোরতা দরকার তেমনি পারিবারিক সুশাসন দরকার। পারিবারিক সুশিক্ষা আমাদের খুব প্রয়োজন। ছেলেমেয়েরা কি করছে, কোথায় যাচ্ছে তার উপর নজর দেওয়া মা বাবার উচিত। ছোট বেলা থেকে ছেলেমেয়েকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য মা বাবাকে চেষ্টা চালানো উচিত। আমাদের পরিবারগুলো দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। অনেক মা বাবা তার একমাত্র সন্তানকে অনেক আশা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠান। সেই ছেলেটি যখন ধর্ষণের মামলায় জড়িয়ে যায় তখন মা-বাবার অনেক খারাপ লাগে। নিজেদের অনেক অপমানিত বোধ হয়।

তাই অভিভাবকদের অনুরোধ জানাব আপনাদের ছেলেমেয়েদের শ্রদ্ধাবোধ শিখান। ছেলে বা মেয়েটি তার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে যেন বড়দের শ্রদ্ধা করে আবার ছোটদের স্নেহ মমতা প্রদান করে।

রূপম চক্রবর্ত্তী ✍
পূর্বনলুয়া,সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম