নমুনা না দিয়ে কিভাবে করোনা রোগী হলাম : নাইক্ষ্যংছড়ির আলম আরা

হাবিবুর রহমান সোহেল, নাইক্ষ্যংছড়ি ◑

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আরও একজন করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এই নিয়ে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হওয়া আলম আরা নামে নারী বলছেন, তিনি করোনা পরীক্ষা করেননি এবং নমুনাও কেউ সংগ্রহ করেননি।

এই নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য বিভাগ জুড়ে তোলপাড় তৈরি হয়েছে। রোগী শনাক্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাদ্বন্ধে পড়েন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, গত রোববার নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া এক নারীর শরীরে করোনা সন্দেহ হলে ল্যাব টেকনিশিয়ান এ্যানি চাকের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. অভিজিত চক্রবর্তী। পরে ওই নমুনা কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে টেষ্টে পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ল্যাবে পাঠানো নমুনা কালেকশন কপিতে ওই নারীর নাম উল্লেখ ছিল ‘আলম আরা’ এবং স্বামীর নাম ছিল ‘জামাল হোসেন’।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়িতে আরও একজন করোনা শনাক্ত হয়েছে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির বসতবাড়ি ও আশপাশের এলাকার অবস্থান জানতে চান।আর সেখানেই তৈরি হয় ধুম্রজাল।

আলম আরার বিষয়ে এলাকায় খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, তিনি সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতালে যাননি এবং কেউ তার নমুনাও সংগ্রহ করেননি। করোনা আক্রান্তের তালিকায় কিভাবে তার নাম এলো তিনি জানেন না।

ঘটনাস্থলে যাওয়া নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন জানান, রোববার হাসপাতালে জান্নাতুল হাবিবা নামে এক নারী চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। হাসপাতালে তিনি নিজের প্রকৃত নামের পরিবর্তে ‘আলম আরা’ এবং মোবাইল নাম্বারটি তার নিজের স্বামীর লিপিবদ্ধ করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে জামাল হোসেনের স্ত্রী আলম আরা হাসপাতালে যাননি বলে দাবি করছেন। তারা উভয়ে সম্পর্কে আত্মীয়।

রোগী নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. আবু জাফর মোঃ ছলিম জানান, করোনা আক্রান্ত হয়েছে ঠিক। তবে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজের নাম গোপন করার কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। এখানে হাসপাতালের কারো ব্যর্থতা নেই।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, আলম আরা নামে দু’জনের বাড়িই লকডাউন করা হয়েছে। যেহেতু তাদের মধ্যে কেউ তথ্য গোপন করছে, তাই আবারও নমুনা সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে বান্দরবানের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীটিও ছিল নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু গ্রামের। ওই রোগীর শরীরে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর নাইক্ষ্যংছড়ি হহাসপাতালে আইসোরেশনে রাখা হয়। ১০ দিন পর গত রোববার (২৬ এপ্রিল) তিনি বাড়ি ফিরেছেন।