নিজেই নিজের গলায় বটি চালালেন পুলিশ কনস্টেবল

অনলাইন ডেস্ক ◑ মানসিকভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন পু‌লিশ কনস্টেবল রবিউল আউয়াল। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর খানিকটা সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মা ও ভাইকে হারানোর যন্ত্রণা রবিউলকে পুরোপুরি সুস্থ হতে দেয়নি। কোনোভাবেই মা ও ভাই হারানোর শোক সইতে পারছিলেন না তিনি। মাঝেমধ্যেই যন্ত্রণায় ছটফট করে উঠতেন। এক পর্যায়ে মা ও ভাইয়ের সেই অন্তিম ঠিকানায়ই যাত্রা করলেন মুক্তিযোদ্ধা বাবার সন্তান রবিউল। রান্না ঘরে ঢুকে নিজেই নিজের গলায় বটি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।

গাজীপুর মহানগরের বিলাশপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি গত বুধবার রাতে ঘটলেও জানাজানি হয় শুক্রবার।

পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের মুন্সিপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল খন্দকারের ছেলে রবিউল আউয়াল পু‌লিশ কনস্টেবল হিসেবে কিশোরগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। ছয় মাস আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার মা ও ভাই। এরপর থেকেই রবিউল মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। গত জানুয়ারিতে চিকিৎসার জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসেন তিনি। দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। কিছুটা সুস্থও হয়ে উঠেন তিনি। কর্মস্থলে যোগদানের চিঠি পেয়ে বুধবার সকালে রবিউলকে নিয়ে তার বাবা ও ভাই কিশোরগঞ্জে যান। কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়ায় তার পক্ষে কর্মস্থলে যোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ওই দিনই মহানগরের পশ্চিম বিলাশপুর বাড়িতে ফিরে রাতে রান্নাঘরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজার ছিটকিনি আটকে দেন। পরে দীর্ঘ সময়েও তার সাড়া শব্দ না পেয়ে বাড়ির লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে রান্নাঘরের মেঝে থেকে রবিউলের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর মহানগরের সদর থানা পুলিশ।

সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর ভূঞা জানান, ধারণা করা হচ্ছে মা ও ভাইকে হারানোর শোক থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন রবিউল। তার পরিবার চিকিৎসা করিয়েও তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারেনি। যন্ত্রণা থেকেই হয়তো রবিউল গলায় বটি চালিয়ে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নিয়েছেন। ময়নাতদন্ত শেষে ওই দিনই তার লাশ দাফন করেছে পরিবারের সদস্যরা।