ফণীর পর আক্রমণ করতে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় বায়ু

ডেস্ক রিপোর্ট – সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের দল চক্রাকারে আসতেই থাকে৷ প্রবল গতিতে সেই ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দেয় জনজীবনকে৷ সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায় উপকূল এলাকার সবকিছু৷ তেমনই ভয়াবহ আকার নিয়ে ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে ঢুকছে ফণী৷ এর ভয়াবহতা আন্দাজ করে সতর্ক বাংলাদেশ ও ভারত সরকার৷ বিষধর সাপের ফণার মতো সে ছোবল মারবে৷

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ফণীর তাণ্ডব একসময় ঝিমিয়ে পড়বে৷ তারপর আবার এক নতুন সামুদ্রিক ঝড় তৈরি হবে৷ সেই ঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে বায়ু৷ বিবিসি রিপোর্টে বলা হয়েছে সামুদ্রিক ঝড় বায়ু এরপর হামলা করতে মুখিয়ে রয়েছে৷ এই নামকরণ করেছে ভারত৷

বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগর উপকূলের আটটি দেশের (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মায়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং ওমান) প্যানেল WMO/ESCAP অনুসারে একটি তালিকা থেকে পরবর্তী ঝড়ের নামকরণ করা হয়। এই আটটি দেশ একেকবারে আটটি করে ঝড়ের নাম প্রস্তাব করেছে। প্রথম দফায় মোট ৬৪টি নাম নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন ফণী নামটি বাংলাদেশের দেয়া। এরপরের ঝড়ের নাম হবে ভারতের প্রস্তাব অনুযায়ী বায়ু।

আপাতত ফণী ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের অপেক্ষায় বঙ্গোপসাগর লাগোয়া ভারত ও বাংলাদেশের বিশাল উপকূলীয় অঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ দুই দেশের সরকার ক্ষয় ক্ষতি রুখতে তৎপর৷ খোলা হয়েছে ত্রাণের জন্য বিশেষ শিবির৷ প্রস্তুত উদ্ধারকারী দল৷ গত ৪৩ বছরের মধ্যে এই সামুদ্রিক ঝড় সব থেকে শক্তিশালী আকার নিয়ে তেড়ে আসছে৷

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী ধীরে ধীরে উপকূলের কাছাকাছি আসছে। ইতোমধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে, দমকা বাতাসে সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ।

শুক্রবার সকালে বাংলাদেশের আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

এটি শুক্রবার রাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫০ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কি. মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার বিকালে দিকে ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে এবং পরবর্তী সময়ে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা ও কাছাকাছি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় শুক্রবার সকাল নাগাদ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কি. মি. যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।