বাঁকখালী দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের হিড়িক

সৈয়দুল কাদের :

বাঁকখালী নদীতেই গড়ে উঠছে আরেকটি শহর। কস্তুরাঘাট-খুরুশকুল সেতু নির্মিত হওয়ার পর এই এলাকাটি পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হলেও প্রকাশ্যে দখলবাজী দেখে অনেকেই বিস্মিত হচ্ছেন। নদী দখল করে নির্বিঘ্নে বহুতল ভবন নির্মাণ হলেও যেন দেখার কেউ নেই। এতে বাঁকখালী নদী অস্তিত্ব হারাতে চলেছে। এসব বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য নদী দখল করে কাটা হয়েছে প্যারাবনের অসংখ্য গাছ।

অভিযোগ উঠেছে, এই অবৈধ ভবনগুলোতে নিয়ম লঙ্ঘন করে দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ সংযোগ। আইনী জটিলতা সৃষ্টি করাই দখলবাজদের মূল লক্ষ্য।

জানা যায়, কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটে কক্সবাজার মৌজার বিএস ১ নং খাস খতিয়ানের বিএস ২২৬২ দাগে নদী শ্রেনীর ৫৪ একর ০৪ শতক, ২২৬২/২২৭০ দাগে খাল শ্রেণির ১ একর ৬৬ শতক, ১০০০১ দাগে বালুচর শ্রেণির ১ একর ৫১ শতক, ১০০০২ দাগে নদী শ্রেণির ৬৬ একর ৪০ শতক এবং ১০০০৩ দাগে বালুচর শ্রেণির ২২ একর ৯০ শতক জমির অধিকাংশ প্রকাশ্যে দখল করে প্যারাবন ধ্বংস করে ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, বিগত দুই বছর ছিল বাঁকখালী দখলের মহোৎসবের বছর। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২৩ সালের ২৮ ফ্রেব্রুয়ারী ও ১ মার্চ দু’দফা উচ্ছেদ অভিযান চালালেও পুণরায় দখল করেছে অবৈধ উচ্ছেদ হওয়া জমি।

নদীর জমিতে প্লট তৈরী করে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন ভবনে লাগানো হয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডও।
জানা গেছে, একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের দায়ের করা মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশক্রমে দু’দফা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছিল। ওই মামলাটি এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। মামলা দায়েরকৃত আদালতে নিষ্পত্তির জন্য আদেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’-এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, নদী এবং প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় জোয়ার-ভাটায় বাঁধ দিয়ে জলাশয় ভরাট ও প্যারাবন ধ্বংসের কর্মকান্ড বছরের পর বছর অব্যাহত রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে মানববন্ধন, সভা, স্মারকলিপি প্রদান সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ায় দখলদাররা অপরাধ কর্মকান্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। গত এক বছরে বাঁকখালী নদী ও নদী তীরের ১০০ একর জমি দখল করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানকে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলে তিনি এ বিষয়ে অবহিত আছেন বলে জানান।