বিদায় বেলায় কাঁদলেন, কাঁদালেন জেল সুপার বজলুর রশিদ আখন্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোছাইন বলেছেন, সরকারী কর্মকর্তা এবং কর্মীদের এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে বদলী হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। জেল সুপার বজলুর রশীদ বদলী হয়ে চলে গেলেও কক্সবাজারে রয়ে যাবে তার অনেক কর্মময় স্মৃতি।

তিনি বলেন, বিগত ১ বছর যাবত কক্সবাজার জেলায় চাকরির সুবাধে বিদায়ী জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। একজন কর্মকর্তার মাঝে যে মানব স¤পদ উন্নয়ন, কাঠামো ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের গতিকে বাস্তবায়ন ও সৃজনশীলতা থাকা উচিত, এসব গুণাবলি ওনার মধ্যে বিদ্যমান ছিলো।

কারাঅভ্যন্তরীন এবং বাইরে তিনি যে সকল কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছেন, তা কারাগারে কর্মরত এবং আগত কর্মীরা গভীরভাবে স্মরণ করবেন। তিনি যে স্টেশনে যাবেন আশা করছি, তিনি তাঁর সৃজনশীল কার্যক্রমের ধারা অব্যাহত রাখবেন।

কক্সবাজার জেলা কারাগার কর্তৃক আয়োজিত জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দের বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার রীতেশ চাকমার সভাপতিত্বে ও ডিপুটি জেলার মনির হোসেনের পরিচালনায় বিদায় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বক্তারা জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দের যোগদানের পর থেকে কারগারের বন্দিদের কল্যাণে করা তাঁর অতীত অনেক কর্মের স্মৃতিচারণ করে সকলেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। আনন্দ-বেদনার এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুমেন মন্ডল, কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাংবাদিক রাসেল চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ। বক্তব্য রাখেন সর্বপ্রধান কারারক্ষী আমিনুল ইসলাম, সার্জেন্ট মামুনুর রশিদ ও কারারক্ষী ছৈয়দ নুর ।

বিদায়ী জেল সুপার বজলুর রশীদ আখন্দ বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ৩ বছর যাবত কক্সবাজার কারাগারে কর্মরত ছিলাম। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কারাভ্যন্তর এবং বাহিরে উন্নয়নের গতিতে তরান্বিত করে বাস্তবায়ন করেছি। দেশের স্বার্থে কারাগারে শৃঙ্খলা ফেরাতে অনেক সময় কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এসব কারণে কোন কারারক্ষী মনক্ষুন্ন করলে তিনি উপস্থিত সকল কারা কর্মীদের প্রতি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান।

তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার কারাগারে দীর্ঘ সাড়ে ৩ বছর যাবত প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত ছিলাম। চেষ্টা করেছি, কারাগারকে মডেল কারাগারে রুপান্তরে। বাকি চাকরী জীবন যাতে সফলতা ও সুনামের সাথে সম্পাদন করতে পারি, সেজন্য উপস্থিত সকলের নিকট দোয়া কামনা করেন তিনি।

সমাপনী বক্তৃতায় অনুষ্ঠানের সভাপতি কক্সবাজার কারাগারের জেলার রীতেশ চাকমা বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস যাবত স্যারের সাথে চাকরির সুযোগ হয়েছে। স্যার অভিজ্ঞ ও বহুগুণে গুণান্বিত একজন মানুষ। স্যারের বিদায় মেনে নেওয়া যায় না। তবুও সরকারী চাকরির নিয়ম নীতিকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে আজ তিনি দিনাজপুর জেলা কারাগারে যোগদান করবেন। তিনি স্যারের জন্য উপস্থিত সকল কারাকর্মী এবং আগত মেহমানদের কাছে দোয়া কামণা ও ভুলত্রুটি ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানান।