বিদেশ ফেরতদের হদিস নেইঃ করোনা ঝুঁকি বাড়ছে টেকনাফে

বিশেষ প্রতিবেদক ◑

করোনা প্রার্দুভাব এড়াতে ‘কোয়ারেন্টিনে’ নিতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বিদেশ ফেরতদের খোঁেজ মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন। সরকারি তালিকায় হিসেবে বিদেশ ফেরত শতাধিকের বেশি মানুষদের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এতে সীমান্তের টেকনাফ আরও করোনা ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন। তবে গত দুই দিনে ৩৩ জন বিদেশ ফেরতকে ‘কোয়ারেন্টিনে’ নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বাকিদের খোঁেজ কাজ করছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

ইতি মধ্যে অবৈধপথে ভারত ফেরত টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রিত এক রোহিঙ্গা পরিবারকে ‘কোয়ারেন্টিনে’ নেওয়ায় উদ্বগউৎকন্ঠা আরও বেড়েছে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে। পাশপাশি সীমান্তের গবাদিপশুসহ মালামাল আমদানি রপ্তানি অব্যাহত রয়েছে টেকনাফ স্থলবন্দর ও শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে। এই মূর্হতে এই করিডোরগুলো বন্ধের দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিকরা।

এদিকে (২৩ মার্চ) সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদেশ ফেরতদের খোঁজে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা: টিটু চন্দ্র শীল এর নেতৃত্বে একটি দল সাবরাং ইউনিয়ের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকজন বিদেশ ফেরতদের ‘কোয়ারেন্টিনে’ নিশ্চিত করেন। একই দিন দুপুর থেকে টেকনাফ উপজেলায় ফার্মেসি ও নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্য ছাড়া সকল মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধে বিদেশ ফেরতদের মধ্যে ৩৩ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ নেওয়া হয়েছে। তবে বিদেশ ফেরত তালিকায়ভুক্ত অনেককে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তাদের খোঁেজ মাঠে কাজ চলছে।’

তিনি বলেন, ‘জনসমাগম না করতে মাইকিং করে সচেতনতা করা হচ্ছে। এতে সাড়া দিয়ে অনেকে মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রেখেছে। তবে ফার্মেসিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা রয়েছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা: টিটু চন্দ্র শীল বলেন, ‘করোনা রোধে একটি তালিকা নিয়ে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। গত দুই দিনে ৩৩ জন বিদেশ ফেরতকে ‘কোয়ারেন্টিনে’ নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে অনেক বিদেশ ফেরতদের খোঁজ হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ‘কোয়ারেন্টিনে’ নিশ্চিতে স্বাস্থ্য কর্মীরা তদারকি করছে।’

তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাস রোধে প্রতিদিন সচেতনতা মূলক প্রচারনা ও মাইকিং চলছে। তবু আমার অনুরোধ হলো নিজে এবং দেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে খুব বেশি প্রয়োজনী ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। তাছাড়া যেসব স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনা রোধে মাঠে কাজ করছে তারাও ঝুঁকি মুক্ত নই।’

এদিকে করোনা প্রার্দুভাব এড়াতে সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে সমাগম এড়াতে ফার্মেসি, কাঁচা বাজার, মুদির দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যর দোকান ছাড়া বাকি সকল মার্কেটসহ দোকানপাট বন্ধ রাখতে অনুরোধ জানানো হয়।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ফার্মেসি ও নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যর দোকান ছাড়া, বাকি সকল মার্কেটসহ দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এতে জনগন সাড়া দিয়েছে। মূলত জনসচেতনতা বাড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি করোনা মুক্ত থাকতে জনগনকে নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করতে অনুরোধ করা হয়েছে। ’

অন্যদিকে টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরে ভারত ফেরত চারজনের এক পরিবার ‘কোয়ারেন্টিনে’ নেওয়া হয়েছে। পাশপাশি সীমান্তের টেকনাফ স্থলবন্দর ও শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে গবাদিপশুসহ মালামাল আমদানি রপ্তানি অব্যাহত রয়েছে। এতে উদ্বেগউৎকণ্ঠের মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা।