বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন ফরিদ ও হামিদ

বিশেষ প্রতিবেদক :

চকরিয়া, কুতুবদিয়া এবং পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতারা এখন একাট্টা। যে কোন মূল্যে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে চান তাঁরা। ফলে উল্লেখিত ৩ উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছেছেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, সারাদেশের মতো উল্লিখিত উপজেলাগুলোতে বিএনপি এবং জামায়াত প্রার্থী দেয়নি। ফলে সংগঠন দুইটির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের একশ্রেণীর নেতাদের ইন্ধন জোগাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত নেতাদের পরোক্ষ নেতাদের ইন্ধনে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকজন নেতা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে প্রার্থী হয়েছেন। প্রথমদিকে বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে না নিলেও গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতারা এই বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করছেন। যে কোন প্রকারে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করাতে চাইছেন তাঁরা।
জানা গেছে, এই কাজে সফলতাও এসেছে। গতকাল আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত উখিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাহামুদুল হক চৌধুরী ও তার পুত্র যুবলীগ নেতা ইমরুল কায়েস চৌধুরী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। সাবেক সংসদ-সদস্য আবদুর রহমান বদি সহ সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় এই প্রতিশ্রুতি দেন পিতা-পুত্র। অপরদিকে অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল মনসুর চৌধুরীও গতকাল তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
উখিয়ার সচেতন লোকজন বলছেন, এতোদিন ধরে মাহামুদুল হক চৌধুরীকে পেছন থেকে সমর্থন জোগানো উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা এখন রাজনৈতিকভাবে এতিম হয়ে পড়েছেন। সেই সাথে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের যারা তামাশা দেখতে চেয়েছিলেন তাদেরও খায়েস মিটার পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে বেশী আলোচিত হচ্ছে গত ১০ বছর ধরে উখিয়ায় সরকার দলীয় রাজনীতির ছায়ায় যারা আখের গুছিয়েছেন সেই সব নেতা-কর্মীদের স্বার্থান্ধতা। ফলে উখিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হামিদুল হক চৌধুরীর অবস্থান এখন কেবল বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতার ঘোষণাটি বাকি। গত কয়েকদিনের রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টি সত্যে পরিণত হয়ে অবশেষে হামিদুল হক চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে চলেছেন।
একই অবস্থা চকরিয়া উপজেলাতেও। উপজেলাটিতে বিএনপি-জামায়াতের পরোক্ষ সমর্থন নিয়ে বেশ এগিয়ে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পরিচিত ফজলুল করিম সাঈদী। আওয়ামী লীগের একশ্রেণির নেতা-কর্মীর সমর্থনও পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু গত কয়েকদিনে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সংসদ-সদস্য জাফর আলমের সমর্থকরা এখন প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর পক্ষে। সবাই একাট্টা হয়ে বিজয়ী করতে চাইছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে। ফলে সাঈদী সমর্থকরা কিছুটা কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন। এই অবস্থা নির্বাচন পর্যন্ত বজায় থাকলে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমন কথাই জানালেন আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে পরিচিত লোকজন।
উল্লিখিত উপজেলাগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সামলাতে হচ্ছে। কিন্তু কুতুবদিয়ার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিক। তাঁর একজন প্রতিদ্বন্দ্বী থাকলেও মনোনয়নপত্র বাছাইকালে তাঁর ঋণ খেলাপী হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। ফলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষিত হয়। এরপর থেকেই অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া সময়ের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।