ঝুঁকিতে ২ লাখ মানুষ

ভারী বর্ষণ, তবুও থামছে না পাহাড় কাটা

সাইফুল ইসলাম, কক্সবাজার জার্নাল

টানা ভারী বৃষ্টি তবুও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটা থামছে না। পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কায় ইতিপূর্বেই কক্সবাজার শহরসহ জেলায় যারা পাহাড়ের উপর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অথচ এই জেলার পাহাড়ের উপর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে দুই লাখেরও বেশি মানুষ।

সম্প্রতি বৃষ্টির সাথে তাল মিলিয়ে চিহ্নিত পাহাড় খেকোরা বেপরোয়াভাবে পাহাড় কাটছে। ফলে সড়ক ও নালা-নর্দমা আটকে গিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণে জনগনের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একদিকে বৃষ্টির সাথে তাল মিলিয়ে পাহাড় কাটা, অন্যদিকে পাহাড় উপর ঝুঁকি নিয়ে ২ লাখেরও বেশি বসবাসরত মানুষ। অথচ তাদেরকে প্রাণে বাঁচাতে নানা উদ্যোগ নিয়ে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের বেশ কয়েকটি স্পটে বেপরোয়াভাবে পাহাড়া কেটেছে পাহাড় খেকোরা। এরমধ্যে পাহাড়তলী ইসলামপুরে, আলিঁরজাহাল সাহ্যিতিকা পল্লী, দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়াস্থ বাঁচা মিয়ার ঘোনা ও এবিসি ঘোনায়, লাইস হাউস পাড়া, ফাতের ঘোনা, ঘোনা পাড়া ও বৈদ্যঘোনার বেশ কয়েকটি স্পটে বৃষ্টির সাথে তাল মিলিয়ে পাহাড় কাটা শুরু করেছে। পাহাড় ধসে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হলেও তারা সাড়া দেন না।

এ দিকে জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজার জেলায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কায় লোকজনকে নিরাপদ আশয়ে সরিয়ে নিতে ইতিপূর্বে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে লোকজন সরিয়ে নিতে কোথাও কোথাও অভিযানও চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিংও অব্যহত রয়েছে।

এডভোকেট শওকত বেলাল বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়দের সঙ্গে রোহিঙ্গারাও ব্যাপক হারে পাহাড় দখল করছে। পাহাড় কেটে তারা অবৈধ বসতি গড়ে তুলছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের মাটি নরম হলে পাহাড় কাটা শুরু করে পাহাড় খেকোরা। ফলে এই সময় পাহাড়ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা বেড়ে যায়। অতি কক্সবাজার জেলায় পাহাড়ধসে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হলেও থামছে না ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস ও পাহাড় কাটা।

পাহাড়তলী, বৈদ্যরঘোনা ও কলাতলী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৫০ হাজার মানুষ প্রবল ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। টানা এই বৃষ্টিতে কেউ কেউ পাহাড়ও কাটছে। ফলে পাহাড়ধসে মাটি নেমে এসে ভরাট হয়ে যাচ্ছে শহরের নালা-নর্দমা।

পাহাতলী ইসলামপুরে পাহাড়ের চূড়ায় পরিবার নিয়ে বসবাস করছে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা আব্দুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, থাকার জায়গা নেই, তাই ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়েই বাস করছি। পাহাড় কাটার কথা জিজ্ঞাস করা হলে অতিরিক্ত ঝুঁতিকে রয়েছে। তাই একটু সমতল করেই ঝুঁকি এড়াতে চাচ্ছি। পাশেই আরেকটি ঝুপড়ি ঘর তুলে বাস করছেন ভারুয়াখালী থেকে আসা মো. মিয়া।