মানুষ দিন দিন আত্নকেন্দ্রীক হয়ে যাচ্ছে

সময় আর প্রয়োজন মানুষকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো মানুষ এখন আর সহজে সংগ্রহ করতে পারছে না। প্রতিনিয়ত মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে গেছে ব্যাপকভাবে।

সবার মাঝে সর্বদা চাপ থাকে দৈনন্দিন ব্যয় সে মেটাবে কেমন করে। সব সময় অস্থিরতা কাজ করে মানুষের মাঝে। তার উপর রয়েছে গোদের উপর বিষ ফোঁড়া- রোহিঙ্গারা,উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা আসার পর থেকে মানুষের মাঝে শান্তি চলে যাচ্ছে,বাড়ছে নানান সমস্যা। আর রয়েছে আমাদের অপরাজনৈতিক সংস্কৃতি।

মানুষ চিন্তা চেতনায় এখন আর স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না। নিজের উচ্ছ্বাস, উল্লাস আর নিজের মতো করে ব্যাপকভাবে প্রকাশ করতে পারে না। রাস্তাঘাটে পথে প্রান্তে কখন কোন বিপদের সম্মুখীন হয় তা ভাবনার বাইরে। ঘরের বাইরে বের হয়ে একজন মানুষ যে নিরাপদে ঘরে ফিরে আসবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। চারপাশে পশুত্বের ছড়াছড়ি। অদৃশ্য দুর্ঘটনার হাতছানি প্রতিনিয়ত। বেচারা প্রাণটা নিয়ে নির্মোহ বেঁচে থাকার প্রয়াসে মানুষজন আজকাল আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে বহুলাংশে। হয়ে পড়ছে অসামাজিক। নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকছে সব সময়। অনেকটা নিজে বাঁচলে বাপের নাম টাইপের।যার ফলে অতিস্বার্থ কেন্দ্রিকতায় আমরা হাবু-ডুবু খাচ্ছি। অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা এখন বড্ড বেশি গাফেল। এখন আর একজনের বিপদে অন্য আরেকজন এগিয়ে আসছে না। কিংবা সম্মিলিতভাবে মানুষ এখন আর সৃষ্টির আনন্দে মেতে উঠছে না। মানুষগুলো যখন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, অন্যের সুখ সুবিধার কথা ভুলে যায়, তখনই সেই সমাজে দেখা দেয় চরম নৈরাজ্যতা আর সমাজ থেকে হারাতে থাকে সহনশীলতা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মমত্ববোধ।

আরেকটি ব্যাপার হল ইন্টারনেট,এই ইন্টারনেটের যুগে আরো বেশী অমনোযোগী হয়ে যাচ্ছি- কাজে, আড্ডায়, গাড়িতে,বাড়িতে সবাই ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি,  একজন অন্যজনের দিকে তাকাবার সময় পায়না, কেউ কারো সুখ-দুঃখের কথা শুনতে পারিনা।

এই আত্মকেন্দ্রিকতা, এই অসামাজিকতা আমাদের বিপজ্জনক এক ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মানুষ সামাজিক ও সংঘবদ্ধ জীব। মানুষের এই মৌলিক সংজ্ঞাটি বিবর্তিত হয়ে গেলে মানুষ কি আর মানুষ থাকবে?

চলুন আমরা যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেকে বিলিয়ে দেই অন্যের তরে, অন্যের অধিকারের প্রতি হই শ্রদ্ধাশীল। তবেই নিজেকে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে ভাবতে পারবো।

আবদুল্লাহ আল আজিজ

সম্পাদক (কক্সবাজার জার্নাল ডটকম)