‘সেদিন মানুষ বলবে পলায়নের জায়গা কোথায়’!

শাহনেওয়াজ জিল্লু ◑

এটি কোরানের একটি আয়াত। কোরানটা হলো আমার কাছে প্রাকৃতিক গ্রন্থের মতো। যার প্রতিটি বাণী অতি প্রাকৃতিক ধ্বণি। বিশেষ একটি দিবসকে কেন্দ্র করে স্রষ্টা মানুষ সম্পর্কে কথাটি বলেছেন। যা ১৪শত বছর পূর্বে গ্রন্থাকারে নথিভূক্ত হয়।
সামান্য এক ভাইরাসের কবলে পড়ে চীন আজ সমগ্র বিশ্ব থেকে ছিটকে পড়েছে। কেউ তাদের সাথে কথা বলছে না। সবাই যেনো চীনাদের দেখলে পালাই পালাই অবস্থা। আরও মর্মান্তিক হলো- তারা নিজেরাই নিজেদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আদরের সন্তান থেকে পিতামাতা, ভাই থেকে বোন, স্বামী থেকে স্ত্রী! কেউ কারও সাথে মিশছেনা। কথা বলছেনা। হিন্দু ধর্মীয় প্রথায় নিম্নবর্ণের মানুষগুলোকে অস্পৃশ্য মনে করা হয়। অথর্যাৎ নিম্নবর্ণের মানুষগুলোকে ধরবে না, ছুবে না, সবসময় তাদের ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখতে হবে। এটাকেই অস্পৃশ্য বলা হয়। বর্তমানে চীনারা তদ্রুপ এক ডিজিটাল অস্পৃশ্যতায় ভুগছে।

অবাক হই মানুষ এখনও স্রষ্টার প্রতি আনুগত্য পোষণ না করে কীভাবে বিদ্রোহ করতে পারে! অথচ এই তথাকথিত বিজ্ঞান প্রযুক্তির ধারক বাহক চীন, মার্কিন, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, থাই, ফ্রান্স, ব্রিটেন, ইইইউ, ন্যাটোরা কৃত্রিম ভারি অস্ত্র-বোমা-মিশাইল আবিস্কার করে এবং তা দিয়ে লাখো লাখো মুসলিম সন্তানদের দেখেশুনে হত্যা করে। ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দেয়। সম্পদগুলো লুটতরাজ করে নিয়ে যায়। আমাদের পিতা-মাতারা তখন সন্তানদের লাশ নিয়ে বুকফাঁটা আর্তনাদ করে, একটা অ্যাম্বুলেন্সের খোঁজে অসহায় হয়ে এদিক ওদিক দৌঁড়ায়। তবুও তোমাদের মন গলে না। আজকে এক এক করে বসনিয়া হার্জেগোবিনা, আফগান, সিরিয়া, ইরাক, লিবিয়া, ইয়ামেন, ফিলিস্তিন, আরাকান, আসাম, কাশ্মীর, উইঘুরসহ বিভিন্ন দেশে দেশে কৃত্রিম মারণাস্ত্র/বোমা/আগ্নেয়াস্ত্র বানিয়ে মুসলিমদের প্রতিরোধ করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে। আমাদের নিরীহ নারী শিশুদের রক্তপান করা হচ্ছে। এসব বৈজ্ঞানিক অস্ত্রের কারিশমা প্রয়োগ করে তাদের সেকি দম্ভ, অহংকার। তারাই যেনো চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী! এক মহাপরাক্রমশালী!! কিন্তু আসলেই কি তাই???

‘আপনি কি সেই হস্তি বাহীনিকে দেখেননি আপনার রব কীভাবে তাদের ধ্বংস করেছে’!
হে অবিশ্বাসী, অবুঝ, নির্বোধ, অকৃতজ্ঞ মানুষ! তোমরা বিজ্ঞান-প্রযুক্তি দিয়ে নিরীহ মানুষ মারতে সক্ষম হয়েছো কিন্তু নিজেদের নিরীহ লোকগুলোকে কীভাবে বাঁচাতে হয় সেটা আবিস্কার করতে পারোনি। এবং পারবেও না। তথাকথিত গবেষণা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দিয়ে বলে দিতে পারো দুইশো কোটি বছর পূর্বে পৃথিবী কেমন ছিলো আবার কয়শো কোটি বছর পর পৃথিবী ধ্বংস হবে। কিন্তু সেই জ্ঞান দিয়ে তোমরা এটাও কি আবিষ্কার করতে পারোনি কখন তোমাদের এনথ্রাক্স আক্রমন করবে, কখন তোমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবে এবং লাখে লাখে মরবে? এর প্রতিরোধে তখন তোমাদের কিছুই করার থাকবে না; অসহায় হয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া! হ্যা। এটাই চিরন্তন সত্য- কারণ এই বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সবকিছুর ক্ষমতা সসীম।
হে বিজ্ঞানের ধারকবাহক দাবীকারী সম্প্রদায়! এতো আধুনিক ডিজিটাল যুগে এসেও তোমাদের রোগে শোকে মরতে হয়। এরপরও কি দম্ভ চূর্ণ হয় না? নিজেদের তথাকথিত মহাজ্ঞানের প্রতি ঘৃণা হয় না? এরপরও কি তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করবে না? এই যুগই তো প্রযুক্তির সর্বোৎকৃষ্ট যুগ। এখনও যদি এধরণের মৃত্যু ঠেকাতে না পারো তাহলে তোমাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি কী উপকারে আসলো? নাকি শুধুমাত্র মুসলিমদের হত্যা করতেই তোমাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি???

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পড়ে তোমাদের আজ যে দশা হয়েছে, তোমাদের শিশুদের কান্না, তোমাদের কান্না, দুর্ভোগ দেখে আমাদের মায়া হয়, আমরাও কাঁদি। কিন্তু আমাদের আমাদের নারী, শিশু, অসহায় নিরস্ত্র মানুষগুলোকে যখন তোমরা বিজ্ঞান প্রযুক্তির সহায়তায় আবিস্কৃত মরণাস্ত্র দিয়ে হত্যা করো তোমাদের কি তখন এতটুকু বিবেকে নাড়া দেয় না? অথচ আজ চেয়ে দেখো তোমাদের অবস্থা আফগান, সিরিয়া কিংবা ইয়ামেনের চাইতে কোনো অংশে কম নয়।
এই তোমরাই এনথ্রাক্সে আক্রান্ত হও, ইবোলায় কিংবা করোনায়। কখনও এইডস, কখনও দাবানল বা পঙ্গপাল!! তবও কি তোমরা সতর্ক হবে না? এসবে কোন মুসলিমের হাত ছিলো? আর মুসলিমদের উপরও যখন এধরণের কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসে তখন বুঝতে হবে সেটিও তাদের দুহাতের কামাই/উপার্জন।

প্রকৃতির সষ্ট্রার বিরুদ্ধাচারণ করোনা। মহান রবের আনুগত্য করো। তিনি মুলত তোমাদের জীবনকে সুন্দর করতে চান। এজন্যই তিনি তাঁর প্রদত্ত আইনশৃঙখলা মেনে চলতে বলেন। সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে বলেন।

  • শাহনেওয়াজ জিল্লু
  • ০১৬৮২৭৯৩৫১২