মুহিবউল্লাহর ফেসবুক একাউন্টে তোলপাড়

মিয়ানমারের শিক্ষা অর্জন করা মুহিবউল্লাহ’র ফেসবুকে বাংলা লেখার স্ট্যাটাস ভাবিয়ে তুলছে জেলাবাসীকে •

আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজার

বাংলাদেশে বর্তমানে খুব কম লোকই খুঁজে পাওয়া যাবে যাদের ফেসবুকের ছোঁয়া লাগেনি। আর সেই ডিজিটাল ছোঁয়া থেকে বাদ যাননি বহুল আলোচিত সমালোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবউল্লাহ।
ফেসবুকের পরিচিতি ওয়ালে বসবাস কক্সবাজার, বাংলাদেশ দেখিয়ে মুহিব উল্লাহ (গঁযরন টষষধয) নাম দিয়ে খোলা হয়েছে ফেসবুক একাউন্ট। তবে বসবাস বাংলাদেশে দেখানো হলেও তার অর্জিত শিক্ষার ঠিকানা দেখানো হয়েছে ইয়াংগুন টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি ও আরাকান হাই স্কুল। রাখাইন স্ট্যাট বার্মার বুশিডং থেকে আসা হয়েছে উল্লেখ করেন তার ফেসবুকের পরিচিতি ওয়ালের সম্মুখ ভাগে।

গেল মাসের ২৫ তারিখ রোহিঙ্গা শিবিরে রোহিঙ্গা আগমনের ২ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘রোহিঙ্গা সমাবেশ’ বলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সমাবেশ করা এই রোহিঙ্গা নেতা মুহিবউল্লাহ’র ফেসবুক একাউন্ট নিয়ে কক্সবাজার জুড়ে চলছে নানা গুঞ্জন ও তোলপাড়। মিয়ানমারের শিক্ষা অর্জন করা মুহিবউল্লাহ’র ফেসবুক একাউন্টে বাংলা লেখার স্ট্যাটাস পুরো জেলাবাসীকে ভাবিয়ে তুলছে। অনেকে মনে করছেন এটি একটি ফেইক একাউন্ট। আবার অনেকে বলছেন, আসল একাউন্ট, তবে বাংলাদেশি কোন সহায়কের মাধ্যমে এ একাউন্ট চালাচ্ছেন রোহিঙ্গা নেতা মুহিব। এমনকি মুহিব উল্লাহ (গঁযরন টষষধয) নামের ওই একাউন্ট থেকে ‘ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট’ পাঠাচ্ছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের। উক্ত ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো-

“স্বচ্চতা, বৈধতা ও ন্যায়পন্থা আছে…। মাস্টার মুহিব উল্লাহ।

হোয়াইট হাউসে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির হয়ে আমার জনপ্রতিনিধিত্ব, সেখানে আসা-যাওয়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ড ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর কাছে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা ও স্বদেশে প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরি। সেখানে আমাদের প্রতি বাংলাদেশ সরকার ও স্থানীয় লোকজনের দয়া, সহযোগিতা ও সহনশীলতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নয়, সরকারের এক্সিট পারমিট অর্ডার নিয়েই আমার হোয়াইট হাউসে যাত্রা। আমরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যেকেই প্রতিটা মুহূর্তে নিজ বাড়ি-ঘরে ফিরে যেতে অধীর আগ্রহে ও প্রাণপণে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি। আশ্রিত ক্যাম্পে কোন জাতিই চিরস্থায়ী বসবাস চায় না। রোহিঙ্গা সমাবেশ ক্যাম্পের ভেতরে শান্তিপ্রিয় ও সুশৃংখল ভাবে এবং যথাযথ আইন-শৃংখলা বাহিনীকে লিখিত ভাবে অবগত করেই হয়েছে। সমাবেশে প্রত্যাবাসন বা বাংলাদেশ বিরোধী কোন আলোচনা করা হয়নি বরং দ্রুত সময়ে যথাযথ ভাবে প্রত্যাবাসনের দাবি এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। আমি ধনকুবের বা জঙ্গি সম্পৃক্ত নই। আমি সাধারণ একজন (শিক্ষক) মানুষ। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে আমার কোন কার্যক্রম, নেতৃত্ব দান বেআইনি বা অমূলক নয়।”

বাংলাদেশি সহায়ক দ্বারা লিখিত স্ট্যাটাসে মুহিবউল্লাহর ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যেকেই প্রতিটা মুহূর্তে নিজ বাড়ি-ঘরে ফিরে যেতে অধীর আগ্রহী’ কথাটি সহজে বিশ^াস করতে পারছেন না উখিয়া- টেকনাফবাসী। বরং এসব কথার উল্টো প্রক্রিয়া ঘটিয়ে উখিয়া-টেকনাফসহ পুরো জেলাকে রোহিঙ্গা দিয়ে গিলে খাবে এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।