রামুতে দেড় হাজার বছরের প্রাচীন স্থাপনার সন্ধান

খালেদ শহীদ, রামু (কক্সবাজার)

কক্সবাজারের রামুতে দেড় হাজার বছর আগের প্রাচীন সভ্যতার একটি স্থাপনার সন্ধান পেয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের জরিপ ও অনুসন্ধান দল। গত ৯ ডিসেম্বর উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের রামকোটে একটি পাহাড়ি টিলায় এই স্থাপনাটির খোঁজ পান গবেষকরা। ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮০ ফুট প্রস্থবিশিষ্ট এ স্থাপনাটি জাদি বা বৌদ্ধ বিহার হতে পারে বলে ধারণা করছেন তারা।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান ড. আতাউর রহমান জানান, প্রাচীন এই স্থাপনা থেকে মসলা বাটার পাটা আকারের ইট ও টেরাকোটা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর সঙ্গে কুমিল্লার শালবন বিহারে পাওয়া ইট ও টেরাকোটার মিল রয়েছে।

গবেষকরা জানান, সপ্তম-অষ্টম শতকে শালবন বিহার নির্মাণ করা হয়েছে। একই সময়ে একই নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে রামুর রামকোটের এই স্থাপনাটিও নির্মাণ করা হয়। এর আগে গত ১৯ নভেম্বর রামুতে খুঁজে পাওয়া যায় দেড় হাজার বছরের প্রাচীন ইট। ওই স্থান থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরত্বে ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন পাহাড়ি টিলায় মিলল এই স্থাপনা। এটি সমতল থেকে প্রায় দেড়শ’ ফুট ওপরে। গত ১৬ নভেম্বর থেকে কক্সবাজারের রামু, উখিয়া, মহেশখালী ও সদর উপজেলায় জরিপ ও অনুসন্ধান কাজ শুরু করা হয়। এ অনুসন্ধানকালে উত্তর মিঠাছড়ি গ্রামে ১৩৫ বছর আগের একটি শিলালিপি ও ইট এবং উত্তর ফতেখাঁরকুল বণিকপাড়া এলাকা থেকে প্রাচীন একটি হাতির হাড়ের ফসিলের সন্ধান মেলে।

ড. আতাউর রহমানের নেতৃত্বে এই দলে আরও আছেন ফিল্ড অফিসার শাহীন আলম, সহকারী কাস্টোডিয়ান হাফিজুর রহমান, গবেষণা সহকারী মো. ওমর ফারুক, সার্ভেয়ার চাইথোয়াই মারমা, পটারি রেকর্ডার ওমর ফারুক ও লক্ষ্মণ দাস।

গত শনিবার রামুর ঐতিহাসিক আঁধারমানিক গুহা, রামকুট, উখিয়ারঘোনার পাহাড়ের জাদি, অফিসেরচর ডাকবাংলোসহ রামুর প্রত্ননিদর্শন সমৃদ্ধ স্থান পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হান্নান মিয়া।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হান্নান মিয়া জানান, প্রত্ননিদর্শন সমৃদ্ধ রামুর স্থানগুলোকে প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা

হয়েছে। এখানে গড়ে তোলা হবে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর। রামুর আঁধারমানিক গুহার গুপ্তরহস্য উন্মোচনে খননকাজ শুরু করা হবে আগামী বছরের শুস্ক মৌসুমে।