রোহিঙ্গাদের হাতে ৫ লাখ মোবাইল সিম : ইন্টারনেট ব্যবহার থেকে বঞ্চিত স্থানীয়রা

বিশেষ প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ৩০টি ক্যাম্পের ১১ লাখ রোহিঙ্গার অর্ধেকের হাতেই রয়েছে মোবাইল ফোন। বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ছাড়াই এত সিম কার্ড কিভাবে তাদের হাতে গেল, এই প্রশ্নের উত্তর কারও কাছে নেই।

মঙ্গলবার কক্সবাজার জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সভায় বলা হয়েছে, ৫ লাখের বেশি মোবাইল সিম ব্যবহার করছে রোহিঙ্গারা। মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১০ মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৭টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ের মধ্যে সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৩টি অস্ত্র ও বিপুল মাদক।

আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, শুধু মোবাইল সিম নয়, ক্যাম্পগুলোতে থ্রি-জি নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটও ব্যবহার করছে রোহিঙ্গারা। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনেও বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক সক্রিয় থাকে। ফলে সেখানেও অনেক বাংলাদেশি সিম ব্যবহার হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন। সভায় বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হোসেন খান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে দ্রুত কাঁটাতারের বেস্টনি নির্মাণ করে তাদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ক্যাম্পগুলোতে ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপরাধ হচ্ছে। এসব নিয়ন্ত্রণে রোহিঙ্গাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার দ্রুত থামাতে হবে। ক্যাম্পের বাইরে বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদেরও একই স্থানে নিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং ইয়াবা পাচার বন্ধ করতে ‘সীমান্ত সড়ক’ নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিজিবি অধিনায়ক।

উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হামিদুল হক চৌধুরী বলেছেন, বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক ডজনের বেশি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ বর্তমানে এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, স্থানীয়দের এখানে বসবাস কঠিন হয়ে উঠেছে। এদের ভার স্থানীয়রা আর নিতে পারছে না। তাদের শিগরিরই নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে এ সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।