সেবা সংস্থা গুলোর তৎপরতায় অসন্তোষ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সামাজিক সংক্রমণের আশংকা

রফিকুল ইসলাম ◑

বিশ্বব্যাপী চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। কিন্তু তার কোনকিছুই মানা হচ্ছে না পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ঘনবসতি ও ঝুঁকিপূর্ণ উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে। তারা এসব মানার প্রয়োজনও মনে করছে না। অথচ করোনা সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করার নিয়োজিত সেবা সংস্থাগুলোর অবহেলায় রোহিঙ্গাদের মাঝে করোনা সামাজিক সংক্রমণের দিকে এগোনোর আশঙ্কা স্থানীয়দের।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে উখিয়ার-১৫ নম্বর জামতলী ক্যাম্পের প্রবেশের মুখের পাশাপাশি তিনটি মসজিদ থেকে শত শত রোহিঙ্গা মুসল্লীকে যোহরের নামাজ শেষে বের হতে দেখা যায়। রোহিঙ্গাদের সরল বক্তব্য ‘আল্লাহ যা করে’। উক্ত ক্যাম্পে প্রবেশের পথের দু’ধারের সব দোকানপাট, বাজার আগের নিয়মে খোলা দেখা যায়। অসংখ্য রোহিঙ্গাকে স্বাভাবিকভাবে কেনাকাটা করতে দেখা যায়।
উখিয়ার কুতুপালং মেগা-৮ নম্বর (ওয়েস্ট) বালুখালী ক্যাম্পে ‘উম্মাহ’ নামের একটি এনজিওকে রীতিমতো হাট জমিয়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা সমাগম ঘটিয়ে এলপি গ্যাস বিতরণ করতে দেখা যায় তিনদিন ধরে। বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে কুতুপালং মেগা-৩ নম্বর মধুরছড়া ক্যাম্পে রিলিফ ইন্টান্যাশনাল এনজিওর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব ছাড়াই কাজ চালাতে দেখা যায়।
উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিরাট আয়তনের ক্যাম্পে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গার অবাধ চলাফেরা বিদ্যমান। কুতুপালংসহ ২১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাট, বাজার, দোকানপাট সবকিছু আগের নিয়মে খোলা রেখে ব্যবসা করা হচ্ছে। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের বসবাসের ক্যাম্পের অলি-গলিতে দোকান গুলোতে সমানে রোহিঙ্গাদের আড্ডা, কেনা বেচা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসহ শতাধিক এনজিও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর লোকজনদের রক্ষা ও সচেতন করতে নানা উদ্যেগ নেয়ার কথা। কিন্তু ক্যাম্পগুলোতে এনজিওগুলো আগের নিয়মে বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। রোহিঙ্গারা অবাধে দোকানপাট, বাজারে বেচা বিক্রি, জনসমাগম ও আড্ডা চালিয়ে আসছে। এতে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমাদের উদ্বেগ, উৎকন্ঠায় থাকতে হয় সবসময়।
উখিয়ার ২১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের করোনা ভাইরাসের সম্পর্কিত ফোকাল পারসন ও উপ-সচিব মো. খলিলুর রহমান খান বলেন, সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তার সমম্বয়ে আইনশৃংখলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর টহল চলাকালীন সবকিছু বন্ধ থাকে। কিন্তু অলি-গলিতে সার্বক্ষণিক তো আর পাহারা দিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। রোহিঙ্গাদের এ আচরণে আমরা চরমভাবে উদ্বিগ্ন বলেও তিনি জানান।