লারপাড়ায় শাহ আলম কোম্পানির নেতৃত্বে পাহাড় কাটার মহোৎসব

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল

কক্সবাজারের বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ঝিলংজার পশ্চিম লারপাড়ায় রামুর শাহ আলম কোম্পানির নেতৃত্বে পাহাড় কাটার মহোৎসব চলছে। দিনে-রাতে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করে আসলেও প্রশাসনের তেমন নজরে আসনি বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল। পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকির অভাবে কোনো মতেই বন্ধ হচ্ছে না এসব পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণের কাজ। সম্প্রতি ওইস্থানে শাহ আলম কোম্পানির নেতৃত্বে তার কেয়ার টেকার আবছার নামে এক ব্যক্তি প্রতিদিন ১০/১২ শ্রমিক দিয়ে দেদারছে পাহাড় কাটছে।

জানা যায়, শাহ আলম কোম্পানি ওইস্থানে বসবাস না করলেও তার কেয়ার টেকার আবছার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেছে। ওই কোম্পানি প্রায় তিন বছরে আগে যেস্থানে পাহাড় কাটা চলছে তার নিচে একইভাবে সরকারী পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছে ভাড়াটিয়াদের। অথচ তিনি সেখানে থাকেনা। পাহাড়ের বাকী অংশটি কেটেও ভবন নির্মাণ করবে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মহিলা বলেন, শাহ আলম কোম্পানি পশ্চিম লারপাড়ায় থাকেনা। তার কেয়ার টেকার আবছার ওইখানে বসবাস করে। ওই আবছার প্রতিদিন শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কাটছে। শাহ আলম কোম্পানি আগেও পাহাড় কেটে এই স্থানে ভবন নির্মাণ করছে। বাকী অংশটি কেটেও ভবণ নির্মাণ করবে বলে জানায়।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গভীর রাত থেকে শুরু করে দিন-দুপুরেও জনসম্মুখে শাহ আলম কোম্পানির নেতৃত্বে কেয়ার টেকার আবছার ১০/১২ শ্রমিক দিয়ে মিনি ট্রাক (ডাম্পার), ঠেলা গাড়িসহ নানা পরিবহনের মাধ্যমে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে।

এছাড়াও কক্সবাজার শহরের আলিরজাহাঁল গরুর হালদা, বিডিআর ক্যাম্পের পিছনে, কলাতলী, লাইট হাউজ, বাসটার্মিনাল, লারপাড়া, ফাওয়ার হাউজের দক্ষিণ পাশে, শহরের সিটি কলেজ এলাকা, আর্দশগ্রাম, চন্দিমা এলাকা, বড়ছরা, বাদশাঘোনা, পাহাড়তলী, কলাতলীর জেল গেইট এলাকাসহ পর্যটন এলাকার বিভিন্ন স্থানে দেদারে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব।

জানা যায়, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সম্প্রতি জমির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ভুমিদস্যু ও পাহাড় খেকোদের বিচরণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। রাতারাতি পাহাড়ি জমি দখল করে শত শত শ্রমিক দিয়ে সমতল বানিয়ে প্লট তৈরি করে তা অধিকমূল্যে বিক্রি করছে। বর্তমানে এ পাহাড় খেকো ও ভুমিদস্যুদের কবলে পড়ে সরকারী উচু পাহাড় সাবাড় করা হচ্ছে। যে পাহাড়গুলো কয়েক দিন পূর্বেও চারদিকে সবুজ আবরণ ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ছিল বর্তমানে পাহাড় কাটার কারণে সেই সৌর্ন্দয বিলীন হয়ে গেছে।

মোহাম্মদ ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, মানুষ কম দামে পাহাড় ক্রয় করে থাকে। বর্তমানে অনেক পাহাড় উজাড় হয়ে গেছে। বিগত সময়ের পাহাড় এখন সমতল ভুমি। ওই ভুমিতে যে পাহাড় ছিল তা বোঝার কোন উপায় নেই। ওসব এলাকাতে জমি ক্রয় করলে একটি সিন্ডিকেটকে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়। নয়তো জমি ক্রয় করলেও তা দখলে যাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে।

অভিযুক্ত শাহ আলম কোম্পানির কাছে পাহাড়া কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, পাহাড়ের কিছু অংশ আমি ক্রয় করছিলাম। কিন্তু ওই অংশটি বর্তমানে অন্যজনকে বিক্রি করে ফেলছি। সম্প্রতি ওই পাহাড় কাটার সাথে আমি জড়িত নয়।

এবিষয়ে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে প্রশাসন সব-সময় শক্ত অবস্থা রয়েছে। পশ্চিম লারপাড়ায় পাহাড় কাটার বিষয়ে আমি আবগত নয়। যদিও শাহ আলম কোম্পানির নেতৃত্বে পাহাড় কাটার সংশ্লিষ্টতা মিলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।