শহরজুড়ে ছিনতাইকারী আর বখাটেদের তৎপরতা বেড়েই চলছে

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল

কক্সবাজার শহরজুড়ে ছিনতাইকারী আর বখাটেদের দৌরাত্ম বেড়েই চলছে। প্রতিদিনেই শহরের কোন না কোন স্থানে ছিনতাইকারী ও বখাটেদের হাতে শিকার হচ্ছে অনেকেই। বিশেষ করে শহরের হাসপাতালের আশপাশেই এসব ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে গ্রামে-গঞ্জে থেকে আসা সাধারণ মানুষ।

গতকাল শনিবার সদরের পিএমখালী থেকে হাসপাতালে রোগি দেখতে আসে জরিনা বেগম ও তার স্বামী আব্দুস সালাম। রোগি দেখে বাড়ি ফেরার পথে হাসাপাতাল রোড়ে হাঁটতে থাকে। পেছন থেকে একদল ছিনতাইকারী জরিনা বেগমের হাতে থাকা ব্যাগটি চিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ওই ব্যাগে ১০ হাজার টাকা ও আট আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিলো। চিনতেও পারেনি ওই ছিনতাইকারীদের। অবশেষে নিরুপায় হয়ে বাসায় ফিরতে হলো তাদেরকে। এভাবেই প্রতিনিয়তেই হাসপাতাল আশপাশেই এধরণের ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে থাকে সাধারন মানুষ। এছাড়া শহরের অলিগলিতে ছদ্দবেশে প্রতিদিন ছিনতাইকারী, বখাটে ও ইভটিজারের আনাগুনা চোখে পড়ার মতো। টার্গেট করে হামলায় পড়ে স্কুল,কলেজ মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রী ও সাধারণ মানুষের উপর।

ছিনতাই আর ইভটিজিং দমনে আইনশৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকলেও কৌশলে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি স্থানীয়দের ভীতি বাড়ছে আশঙ্কাজনক ভাবে। ওইসব ছিনতাইকারী, ইভটিজার ও বখাটেরা বাইক, টমটম ও রিক্সায় যাতায়াত মহিলাদের বিভিন্ন ভাবে হেনস্তা করে থাকে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন অলিতে গলিতে অবস্থান করে ইভটিজারেরা এবং সুযোগ বুঝে মেয়েদের গতি রোধ করে জামা, ওড়না ধরে টানা হেঁচড়াও করে। অনেকে ভয়ে মুখ বুঝে সহ্য করে বাসাই ফিরে। প্রশাসন যদিও প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। তবুও ছিনতাইকারীরা কৌশলে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ।

খোজ নিয়ে জানা যায়, ১০/১২ টির অধিক স্পটে উৎপেতে থাকে ওইসব অপরাধীরা। এসব স্পটগুলো হলো, হাসপাতাল রোড, কলাতলী সৈকতের হোটেল সী-ওয়াল্ড রোড, বাহারছড়া জাম্বুর মোড়, সার্কিট হাউসের আশপাশে, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ের আশপাশে, লালদীঘির পাড়ের বিহারি গলি, কালুর দোকান, বার্মিজ মার্কেট, টেকপাড়া, খুরুশকুল রোডের মাথা, বিজিবি ক্যাম্প, প্রধান সড়কের সাবমেরিন ক্যাবল এলাকা, সিটি কলেজের সামনে, হাশেমিয়া মাদ্রাস পয়েন্টে, কলাতলীর প্রধান সড়কের টিএন্ডটি অফিসের সামনে, শহরের ডায়াবেটিক পয়েন্টে। এই চক্রের সদস্যরা বাসটার্মিনাল থেকে শহরের ঝাউতলা পর্যন্ত টমটমে করে চষে বেড়ায়।
সূত্রে জানা যায়, টমটমের যাত্রীরাই ছিনতাইকারীদের অন্যতম টার্গেট। এই ভয়ংকর চক্রটি সারাদিন তৎপর থাকে। তবে প্রশাসন ছিনতাইকারীসহ সব অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। আটকও হচ্ছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার নবাগত অফিসার ইনর্চাজ সৈয়দ আবু মো. শাহজাহান কবির বলেন, মাত্র কয়েকদিন হচ্ছে সদর মডেল থানায় যোগদান করেছি। বলতে গেলে এখনো আমি নুতন। তবে সম্প্রতি ছিনতাইকারীসহ নানা অপরাধে জড়িত তাদেরকে ধরার জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে। কিন্তু প্রতিনিয়তেই নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে।