জেলা প্রতিনিধি, কক্সবাজার :
‘সুস্থ শ্রমিক, শোভন কর্মপরিবেশ; গড়ে তুলবে স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ প্রতিপাদ্যে দ্বিতীয়বারের মতো কক্সবাজারে নানা আয়োজনে ‘জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস’ উদ্যাপন হয়েছে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালীর মাধ্যমে জেলায় দিবসটির দ্বিতীয় যাত্রা হয়। বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস পালিত হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দে’র নেতৃত্বে উদ্বোধন হওয়া র্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবারও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ফিরে আসে।
এরপর জেলা প্রশাসনের শহিদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা শুরু হয়।
সভায় স্বাগত বক্তব্য ও পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে দিবসটির উদ্যেশ্য উপস্থাপন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কক্সবাজার অঞ্চলের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শাহ মোফাখ্খারুল ইসলাম। এরপরই বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ।
সভায় বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ইমরুল কায়েস, জেলা ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্স অধিদপ্তরের স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ জাহেদ চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি শফিউল্লাহ আনসারী প্রমূখ।
বক্তারা বলেন, কক্সবাজারের জন্য দিবসটি খুবই প্রাসঙ্গিক। এখানে ইন্ডাস্ট্রি না থাকলেও পর্যটন রাজধানী হিসেবে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, ৭ শতাধিক রেস্তোরাঁসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে কাজ করছে লাখো কর্মজীবী। কাজের ক্ষেত্রে তাদের সেইফটি নিয়ে শোভন পরিবেশ গড়া দরকার। আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়তে হলে এটি নিশ্চিত করা অতিব জরুরি। এভাবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সরকারের ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব।
তারা আরো বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়ার সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাস্থ্যসম্মত ও শোভন কর্মপরিবেশ সম্পর্কে মালিক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সব কলকারখানায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার আবশ্যক।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রমজীবী মানুষের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ সামনে রেখে শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কর্মস্থলের নিরাপত্তায় বিনিয়োগ হলো মালিকের শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। শিশুশ্রম নিরসন, কারখানা প্রতিষ্ঠানে সেইফটি নিশ্চিতকরণে সকলকে ঐকবদ্ধ ভাবে কাজ করার জন্য অনুরোধ জানান ডিসি।
র্যালী ও আলোচনা সভায় জেলা সমবায় অফিস, তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মজীবী, নানা শ্রমিক সংগঠন, পেশাজীবি সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্কাউটবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল হতে সারাদেশে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি দিবস’ উদ্যাপন হয়ে আসলেও কক্সবাজারে ২০২৩ সালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কার্যালয়ের যাত্রার পর দিবসটি প্রথম উদযাপন হয় পর্যটন নগরীতে। সরকার শ্রমিক ও মালিকদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিষয়ক নানাবিধ প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য রাজশাহীতে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ করেছে। ###
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-