সংবাদমাধ্যমে পা দেওয়ার পেছনের কারণ!

ইমরান আল মাহমুদ •


ছোটবেলা থেকে যখন ১ম শ্রেণী থেকে ২য় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়,রুমখাঁপালং ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় আমার রোল নাম্বার ছিলো ০২।

তখন থেকেই জন্মদাতা পিতা, যিনি দিনরাত মানুষের ডাকে সেবার জন্য বেরিয়ে পড়েন (রুমখাঁ মনি মার্কেট এর ডাঃ মকবুল আহমদ) ,দোকানে পত্রিকা আনতো আব্বু সহ সবাই পড়তো। স্থানীয় পত্রিকা বেশি পড়তো তখন। সপ্তাহে দুই একবার জাতীয় পত্রিকাও আনতো। সেসময় বড়দের দেখা দেখা পত্রিকা পড়তে শুরু করলাম(তখন বয়স ছিলো ৭-৮বছর)।

প্রাইমারি স্কুল জীবন:
মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে ভর্তি হলাম রুমখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীতে। নতুন ভর্তি হওয়ায় “ক” শাখার রোল নাম্বার ২১ এ ভর্তি করালো। তখন প্রধান শিক্ষক ছিলেন মরহুম মমতাজ বেগম ম্যাডাম(আল্লাহ জান্নাত নসিব করুক)। ক্লাসে সবার পরিচিত হয়ে উঠলাম নিজের দক্ষতার মাধ্যমে। তৃতীয় শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় ৬০০নম্বরের পরীক্ষার মধ্যে ৫৯৭ নম্বর পেয়ে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হলাম চতুর্থ শ্রেণীতে। তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন শ্রদ্ধেয় মাহবুবুল আলম সেলিম স্যার। বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা শুরু হলো। কোনো ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করে থাকতাম সবসময়। তবুও পুরস্কার একটা নিতেই হতো(ক্লাসের ক্যাপ্টেন)। বিজ্ঞান বিষয়ের ক্লাস করাতে আমার প্রিয় শিক্ষিকা শান্তি প্রভা বড়ুয়া (দীর্ঘায়ু কামনা করি শান্তি স্যারের)। অনেক কিছুর পর পঞ্চম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হলাম। প্রতিদিন সময় নিয়ে নিয়মিত পত্রিকা পড়তাম। শ্রেণি পরিবর্তন হলেও রোল পরিবর্তন হয়নি(তখনও ০১)। নতুন বই বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলো। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত মরহুম এ্যাডভোকেট একে আহমদ হোসেন। অতিথিদের মধ্যে তৎকালীন সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাহমুদুল হক চৌধুরীসহ অনেক সিনিয়র ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চম শ্রেণির রোল এক হওয়াতে নতুন বই বিতরণ অনুষ্ঠানে বই আমার হাতে তুলে দিলেন মরহুম এ্যাড. একে আহমদ হোসেন। শ্রেণির রোল ০২ ছিলেন মেধাবী ছাত্রী দিপা বড়ুয়া। তার হাতে বই তুলে দিলেন সাংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। পরে পিএসসি পরীক্ষায় তেমন ভালো রেজাল্ট হয়নি। ভর্তি হলাম সৈয়দ বকতিয়ার -চেমন বাহার চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ে(তখন মাধ্যমিক পর্যন্ত ছিলো)। সেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত রোল ছিলো ০৩। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাকালীন মেধা যাচাই পরীক্ষা দিলাম বিদ্যালয়ে। তৃতীয় স্থান অধিকার করি পুরো বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তখন প্রধান শিক্ষক ছিলেন বর্তমান এনজিও কর্মকর্তা ধুরুমখালীর কৃতিসন্তান শ্রদ্ধেয় মাহমুদুল হক। গণিত করাতেন আমার অন্যতম প্রিয় চৌধুরী পাড়ার নুরুল আজিম চৌধুরী স্যার। টিটু স্যার,আবছার স্যারও ছিলেন প্রিয়দের মধ্যে প্রিয়।

যাহোক,জেএসসি পাশের পর ভর্তি হলাম পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীন মারা গেলেন(সম্ভবত ২০১৬সালের জানুয়ারি ১২তারিখ) সবার প্রিয় স্যার এসএম জাকের আলম। ভিন্ন স্কুল থেকে আসায় দিতে হলো ভর্তি পরীক্ষা। তারপর নবম শ্রেণিতে নতুন ভর্তি রোল ৩০ এ। বিভাগ হিসেবে বেঁছে নিলাম ব্যবসায় শিক্ষা কে। বার্ষিক পরীক্ষার পর রোল ১০ এ উত্তীর্ণ হলাম দশম শ্রেণিতে। তখন অনেক বন্ধু বান্ধব হয়ে গেলো স্কুলে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলেন শ্রদ্ধেয় আমিমুল এহসান মানিক স্যার।

হিসাববিজ্ঞান, ইংরেজিসহ সব বিষয়ে পারদর্শী, অভিজ্ঞ, রফিক স্যারের পরামর্শে হিসাববিজ্ঞান পড়া শুরু করলাম।

কাইছার স্যার,খাইরুল বশর স্যারসহ সব শিক্ষকই আন্তরিকতার সাথে পড়াতেন। এসএসসি পাশের পর সংবাদের দিকে আগ্রহের সৃষ্টি হলো। শুরু করলাম লেখালেখি(ফেইসবুকে)।

কক্সবাজার সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলাম। এইচএসসি(অটোপাশ) এর ফলাফলের অপেক্ষায়। নিয়মিত কলেজে আসা যাওয়ার পথে বিভিন্ন অনিয়ম, জনদূর্ভোগ চোখে পড়ে। এসবের প্রতিবাদস্বরূপ ফেইসবুকে লম্বা করে করে লেখালেখি করলাম। তারপর শুরু অনলাইন পোর্টালে নিউজ পাঠানো। তখন কোনটা কার নিউজ পোর্টাল চিনতামও না,জানতামও না। ই-মেইল ঠিকানায় নিউজ পাঠাতে থাকলাম। প্রকাশিত হলো আমার নিউজ। আগ্রহটা আরো বেড়ে গেলো।

২০১৮সালে উখিয়া প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক কমরুদ্দিন মুকুল মহোদয়কে ও আব্দুল্লাহ আল আজিজ ভাইকে জানালাম কিভাবে অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়া যাবে সে বিষয়ে। ধীরে ধীরে স্টেশনে বের হলে অপরিচিত মুখগুলোর সামনে পড়ে পরিচিত হয়ে উঠলাম (যা চিনে তা তে সন্তুষ্ট আমি)।

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন সদস্য ভর্তি শুরু হলো ২০২০সালের মার্চের শেষের দিকে। সুখ দুঃখে যিনি সবসময় খবর রাখেন প্রিয় বড়ভাই আরফাত চৌধুরীর পরামর্শে সদস্য ফরম নিলাম, সাহসী কলম সৈনিক শ্রদ্ধেয় পলাশ বড়ুয়া দাদার নিকট থেকে। পলাশ দাদা আরো উৎসাহ ও বিভিন্ন পরামর্শ দিলেন। সবচেয়ে তখন আমাকে সদস্য করার জন্য সুপারিশ করেছিলেন কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যাপক,জাতীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের আহবায়ক, কক্সবাজার নিউজ ডটকম-সিবিএন সম্পাদক আক্তার চৌধুরী আংকেল। সরলমনে চলতাম সবসময়। দীর্ঘ দুইবছর অনলাইন পোর্টালে নিউজ পাঠার পর শ্রদ্ধেয় সিনিয়রদের সহযোগিতায় স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা কক্সবাজার একাত্তরে ২০সালে যোগদান করলাম।

শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক, যিনি স্নেহ,ভালোবাসায় মনটা ভরে দেয়। রাসেল চৌধুরীকে বলার সাথে সাথে নিয়ে গেলেন এবং কাজ করলাম পত্রিকায়। সর্বশেষ শ্রদ্ধেয় অগ্রজ সাংবাদিক রাসেল চৌধুরী ও উখিয়ার আরেক সাহসী কলম সৈনিক, উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাব সভাপতি শফিক আজাদ ভাই, আরেক সাহসী কলম সৈনিক শহিদ ভাইয়ের পরামর্শে কক্সবাজারের দৈনিক দৈনন্দিন এ কাজ শুরু করেছি।

চলার পথে কমবেশি সবার সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু উনাদের ঋণ কখনো পরিশোধ করতে পারবোনা যারা সবসময় পাশে থেকে সহযোগিতা করেছেন। এভাবে যাত্রা চলমান। কিন্তু সংবাদ সংগ্রহের আগ্রহ টা সবসময় বুকে ধারণ করে পথচলা। শ্রদ্ধা,ভালোবাসা অগ্রজদের প্রতি। সবার দোয়া ও সহযোগিতা কাম্য।

(ভাষা,শব্দের ভুল সংশোধনযোগ্য)