সন্ত্রাসীদের গুলিতে রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ নিহত

গিয়াস উদ্দিন ভুল,কক্সবাজার জার্নাল •

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া অসহায় রোহিঙ্গাদের সুখ-দুঃখের একমাত্র সারথি শীর্ষনেতা ও সোসাইটি পিছ ফর রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস এর চেয়ারম্যান মাষ্টার মুহিবুল্লাহকে ও অবশেষে গুলি করে হত্যা করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।

২৯ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তি মুহিব্বুল্লাহর বুকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

উখিয়ার কুতুপালং এর লম্বাশিয়া ক্যাম্প ১ ইষ্ট ব্লক ডি -৭ তার অফিসে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মাষ্টার মহিবুল্লাহ (৩২), তার পিতা মৃত ফজল আহমদ, মাতা উম্মে ফজল।

সন্ত্রাসীরা মুহিব্বুল্লাহর অফিসে ডুকে গুলি করে। ক্যাম্পের পুলিশের সহায়তায় তাকে চিকিৎসার জন্য কুতুপালং এম এস এফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ পাহারায় কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য,বিংশ শতকের গোড়ার দিকে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস’ বা এআরএসপিএইচ। স্থানীয় বাংলাদেশি মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গেও গড়েন যোগাযোগ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।

রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ ১৯৯২ সালে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তখন থেকেই সে রয়েছে টেকনাফ অঞ্চলে। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটস’ বা এআরএসপিএইচ।

স্থানীয় বাংলাদেশি মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গেও গড়েন যোগাযোগ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।

দেশের বাইরে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সফর করেন একাধিক দফায়। কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গার ঢল নামার পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। সুস্পষ্টভাবে মুহিবুল্লার আজকের অবস্থানের মূল উত্থান হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার পর। রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা থেকেই মদদ পায় মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ।

ইংরেজি ভাষা ও রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে বিদেশিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যত বিদেশি প্রতিনিধি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে মুহিবুল্লাহ ও তার সঙ্গীদের সাক্ষাৎ করানো হয়েছে।

এই মুহিবুল্লাহ মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ১৭ দেশের যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২৭ প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করেছিলেন সেখানেও যোগ দিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ।