৪৬০ কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া টেকনাফের সেই কম্পিউটার অপারেটর নুরুল রিমান্ডে

অবৈধ পন্থায় উপার্জন করে ৪৬০ কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের সাবেক কম্পিউটার অপারেটর নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদক মামলায় এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নুরুল ইসলামকে গত সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে ইয়াবা, জাল টাকাসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ওই ঘটনায় র‍্যাব বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করেছে।

আজ বুধবার মোহাম্মদপুর থানা–পুলিশ আসামি নুরুলকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানায়। আবেদনে বলা হয়, নুরুলের বাসা থেকে ৪ হাজার ৪০০টি ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে। পাওয়া গেছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০ জাল টাকা। আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, মোহাম্মদপুর এলাকায় ইয়াবা বড়ি বিক্রি করে আসছিলেন তিনি।

এর বাইরে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নুরুল টেকনাফ বন্দরকেন্দ্রিক দালালি সিন্ডিকেটের মূল হোতা। ঢাকায় তাঁর ছয়টি বাড়ি রয়েছে। অবৈধভাবে যে সম্পদ নুরুল বানিয়েছেন, তার মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা। আসামির এত সম্পদ উপার্জন করা নিয়ে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে অনেক সময় দরকার।

অবশ্য নুরুলের আইনজীবী মিনহাজ হোসেন আদালতের কাছে দাবি করেন, ষড়যন্ত্র করে নুরুলকে এ মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। নুরুল মাদক ব্যবসায় জড়িত নন। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে নুরুলকে এক দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

ভোলার নুরুল ইসলাম কক্সবাজারের টেকনাফে আসেন ১৯৯৮ সালে। ২০০১ সালে টেকনাফ স্থলবন্দরে শুল্ক স্টেশনে চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরি পান। বেতন দৈনিক ১৩০ টাকা। মাস শেষে তাঁর বেতন দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯০০ টাকা। সেই নুরুল এখন ৪৬০ কোটি টাকার মালিক বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

র‍্যাবের দেওয়া তথ্য বলছে, রাজধানীতে নুরুলের রয়েছে ৬টি বাড়ি ও ১৩টি প্লট। এর বাইরে সাভার, টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনে আছে আরও ৩৭টি প্লট, জমি ও বাগানবাড়ি।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গতকাল বলেন, নুরুল ইসলাম টেকনাফ বন্দরকেন্দ্রিক ‘দালালি সিন্ডিকেটের’ অন্যতম হোতা।

সিন্ডিকেটে ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছেন। তাঁরা টেকনাফ বন্দরে পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল, ট্রাকস্ট্যান্ড, বন্দরের শ্রমিক ও জাহাজের আসা-যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন। মাদক কারবারিদের সঙ্গেও নুরুলের যোগসাজশ ছিল।

 

• প্রথম আলো