উখিয়ায় বাড়ছে খুন খারাবি

রাশেল চৌধুরী :

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বিভিন্ন এনজিওর নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে।

বিশেষ করে চাকরি দেয়ার নাম করে এনজিওগুলো শিক্ষিত নারীদের তাদের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।

চাকরিস্থলে প্রতিনিয়ত বড় কর্তাদের লালসার শিকার হচ্ছে সুন্দরী যুবতী নারীরা। এমনকি এসব নারীদের বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলে তাদের সতীত্ব নষ্ট করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে করে সাম্প্রতিক সময়ে উখিয়ায় এনজিও সংশ্লিষ্ট নারীদের ঘরে ঘরে সন্দেহ, অবিশ্বাস ও অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। ঘটেছে ডিভোর্স ও খুন খারাবির মতো ঘটনাও।

এরকমই একটি হৃদয়বিদারক ঘটনায় জীবন প্রদীপ নিভে গেছে আবুল হাশেম নামের এক যুবকের। পরকীয়া প্রেম ও বেপরোয়া চালচলনে বাধা প্রদান করে উখিয়ার বালুখালী শ্বশুরবাড়িতে খুন হয়েছেন আবুল হাসেম, এমন দাবি নিহতের পরিবারের। অমানুষিক নির্যাতন করে মুখে বিষ ঢেলে দেয় তারা।

নিহত যুবক রত্নাপালং ইউনিয়নের ঝাউতলা পাড়া গ্রামের বজলুর রহমানের চতুর্থ পুত্র। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যসহ শোক নেমে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে।

স্থানীয় মেম্বার আবদুল গফুর জানান, উখিয়া থানার পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য অনুমতি দেন।

জানা যায়, উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালীস্থ পান বাজার গ্রামের প্রবাসী শামশুল আলমের মেয়ে আকলিমা বেগমের সঙ্গে আবুল হাশেমের দীর্ঘদিন প্রেমের সমপর্ক ছিল। গত বছর দু’জনেই হলফনামা মূলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। আনুষ্ঠানিকতা না হওয়ায় ঘরে তুলে আনেনি এখনো নববধূকে। তবে স্বামী হিসেবে হাশেম প্রতিনিয়ত শ্বশুরবাড়িতে আসা-যাওয়া করতো।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, রোহিঙ্গা ক্যামেপ এনজিও সংস্থা পার্লস বাংলাদেশ কর্মরত আকলিমা। চাকরিস্থলে সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত ও বেপরোয়া চলাফেরা নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একাধিকবার মনোমালিন্য ও ঝগড়ার ঘটনাও ঘটে। স্বামী আবুল হাশেম একাধিকবার চেষ্টা করেও স্ত্রীকে পরকীয়া সম্পর্ক থেকে ফেরাতে ব্যর্থ হয়।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত ৮টার দিকে অজ্ঞাত এক মোবাইল ফোন থেকে খবর দেয়া হয় আবুল হাশেম বিষপান করে উখিয়া হাসপাতালে রয়েছে।

আত্মীয়স্বজনরা দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পায় মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে রয়েছে হাশেম। ডাক্তারদের পরামর্শে তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানে মারা যান তিনি।

নিহতের ছোট ভাই ইমরান সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইয়ের মাথায় মারাত্মক জখমের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও সারা শরীরের আঘাতও দেখা গেছে। নাকে জমাটবাঁধা রক্ত ছিল। কুসুম ফুলে গেছে। তার দাবি পরকীয়া প্রেমে বাঁধা দেয়ার অপরাধে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়।

শুধু তাই নয়, মুমূর্ষু অবস্থায় একটি সিএনজি যোগে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। অপর একটি সূত্রে জানা যায়, শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঘটনার দিন উখিয়া থানায় জামাতা আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি লিপিবদ্ধ করে। এ নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে নানা রহস্য। মঙ্গলবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে খোন্দকার পাড়া কবরস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়।